না.গঞ্জে ১৬ ইউপিতে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে টিকলেন যারা
ডেস্ক নিউজ, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :
নারায়ণগঞ্জে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়েরে শেষ দিন ছিলো বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর)। এ দিনে নারায়ণগঞ্জের তিন উপজেলার ১৬টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৫৮ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া ৫৮৪ জন সাধারণ সদস্য ও ১৬৩ জন সংরক্ষিত নারী সদস্যের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়। চেয়ারম্যান পদে ৬ প্রার্থী এবং ২৯ জন সাধারণ সদস্য ও ৬ জন সংরক্ষিত নারী সদস্যের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে ১৬ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৬৪ জন ও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যের পদে ৮৪৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। সেখানে গোলাকান্দাইল ও ভুলতা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা ও বক্তাবলী ইউপি চেয়ারম্যান পদে মাত্র একজনের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করায় তিনজনই বিনা প্রতিদন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন।
তিন উপজেলায় যে কয়জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা করা হলো:
সদর উপজেলা:
কাশীপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে তিনজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন: বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম সাইফউল্লাহ বাদল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মুহাম্মাদ ওমর ফারুক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম। এছাড়া সাধারণ সদস্যের ৯টি পদের বিপরীতে ৩৩ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্যের ৩টি পদের বিপরীতে ১০ জন মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ২ জন সাধারণ সদস্যের মনোনয়নপত্র।
বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম শওকত আলীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবুল হোসেন ও আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৪১ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ জনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়। সাধারণ সদস্য পদে একজনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে দুইজনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী আব্দুস সালাম। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৩৭ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৮ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ আলীর এবং ৩ জন সাধারণ সদস্য ও ২ জন সংরক্ষিত নারী সদস্যের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে চারজনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মনিরুল আলম সেন্টু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) মনোনীত প্রার্থী এস এম কাদির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ কাউছার আহমেদ, জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৪৬ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। ৫ জন সাধারণ সদস্যের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে তিন জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদ, ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী মো. ফিরোজ। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ২৯ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। চেয়ারম্যান পদে জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী আমানুল্লাহ`র ও ২ জন সাধারণ সদস্যের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জসিম উদ্দিন, নুর হোসেন সওদাগর, ফজর আলী, সাইদুর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আবুল কাশেম। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৩৫ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ জনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়। সাধারণ সদস্য পদে ১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
বন্দর উপজেলা:
বন্দর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে দুইজনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এহসান উদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোক্তার হোসেন। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৩১ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মো. শাহিন ও সাধারণ সদস্য পদে ২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।
মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে চারজন মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গাজী এম এ সালাম, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হজরত আলী, দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম ভুঁইয়া, রুহুল আমিন। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৩৮ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। ১ জন সাধারণ সদস্যের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে এই ইউপিতে।
ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আটজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাসুম আহম্মেদ, বাংলাদেশ খেলাফত ইসলামের মনোনীত প্রার্থী মুফতি আবুল কাশেম, ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আলাউদ্দিন, কামাল হোসেন, আজিজুল হক, জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর, ফয়সাল আহমেদ। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৪২ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১০ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৬ জন সাধারণ সদস্যের।
মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে তিনজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মাকসুদ হোসেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মজিবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মো. মুছা। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ২৫ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১০ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। ২ জন সাধারণ সদস্যের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কলাগাছিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদে দেয়া সকল মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। ইউপি চেয়ারম্যান পদে পাঁচ বৈধ প্রার্থীরা হলেন: বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন প্রধান, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজিম উদ্দিন প্রধান, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মো. শাহাবুদ্দিন, জাকের পার্টির প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফা। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৩৯ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
রূপগঞ্জ উপজেলা:
কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে দশজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহেদ আলী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান, হেলাল উদ্দিন, গুলজার হোসেন, হজরত আলী, রফিকুল ইসলাম, মনির হোসেন, হুমায়ুন কবির, হুমায়ুন কবির বাচ্চু, কামাল উদ্দিন আহমেদ সহ আটজন। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৫৪ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৭ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাতিল করা হয়েছে ৪ সংরক্ষিত নারী সদস্য ও ১ সাধারণ সদস্য পদের মনোনয়নপত্র।
ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদে জমা পড়া চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী আরিফুল হক ভুঁইয়া এবং ইউপির সাধারণ সদস্য পদে ৩৩টি ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুল হাসান ভুঁইয়া তুহিন। তবে সাধারণ সদস্য পদে ৩৪ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাতিল করা হয়েছে সাধারণ সদস্য পদে ২ জনের প্রার্থিতা
মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে দুইজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ আলমাছ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনির হোসেন। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৪০ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ জনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়। সাধারণ সদস্য পদে ১ জনের প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করা হয়।
ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে চারজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন: আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. তায়েবুর রহমান, আলমগীর হোসেন, মোতাহার হোসেন চৌধুরী, কামাল হোসেন, আলম মিয়া। এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৩০ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১০ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। চেয়ারম্যান পদে মোতাহার হোসেন চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠক শেষে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তাফসিল অনুযায়ী, আগামী ১১ নভেম্বর এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ২১ অক্টোবর মনোনয়নপত্র বাছাই, ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর আপিল, ২৪ ও ২৫ অক্টোবর আপিল নিষ্পত্তি, ২৬ অক্টোবর প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও ২৭ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এরপরই চলবে ইউনিয়ন গুলোতে প্রচার প্রচারণা।