বিদায়ের পথে কে এম নূরুল হুদা কমিশন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে বিদায় নেবেন তারা। বিদায়ের আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন, এই কমিশনের শেষ নির্বাচন হতে পারে। কেননা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে বর্তমানে নির্বাচিতদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৭ ফেব্রুয়ারি। এই অবস্থায় বিদায়ের আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করে বিদায় নিতে চাইছে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি। তবে ডিসেম্বরে তফসিল দিয়ে, জানুয়ারির শুরু অথবা মাঝামাঝিতে এ সিটিতে ভোট করার চিন্তা করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছিল। এরপর ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি করপোরেশনের প্রথম সভা হয়। সেক্ষেত্রে ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মেয়াদ শেষ হবে বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে, চলতি বছরের ১১ আগস্ট থেকে আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটির নির্বাচন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের আইনি জটিলতা না থাকায় ভোট আয়োজনের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সম্মতি মিলেছে।
এদিকে দেশজুড়ে এখন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে। এই নির্বাচন শেষ হলেই আগামী বছরের শুরুতে নারায়ণগঞ্জে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নির্বাচনী কাজে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের সম্পৃক্ততা থাকায় বছর শেষের পরীক্ষাসূচি এবং ইউনিয়ন পরিষদের ভোটের বাকি ধাপের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কর্মপরিকল্পনা নিচ্ছে এখন ইসি সচিবালয়। সেক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে নারায়ণগঞ্জে ভোটের আভাস দিচ্ছে ইসি।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে করা যাবে না। দুই বছর বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে; তাদের পরীক্ষা চলছে, তাদের সবকিছু কমপ্লিট করতে হবে। আমরা যদিও প্ল্যান করেছিলাম (বছর শেষে করার জন্য)। কিন্তু ওই বিষয়টা ন্যাশনাল প্রায়োরিটি ও বাচ্চাদের জীবন- দুটিকে কম্প্রোমাইজ করে হয়তো বা আমরা পেছন দিকে করতে পারি, আর তো কিছুদিন রয়েছে। আমাদের মেয়াদে সব কিছু কমপ্লিট করব। জানুয়ারির প্রথমার্ধে করার পরিকল্পনা রয়েছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ রকমই, দেখি কয় দিন লাগে। ইসি সচিবালয় কী প্রস্তাব দেয় দেখি। জানুয়ারির মধ্যেই করে ফেলব। নির্বাচন কমিশন সভায় যখনই সিদ্ধান্ত হবে, তখনই ভোট করার সব প্রস্তুতি সেরে ফেলা হবে বলে জানান ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা। ইসির উপ সচিব (নির্বাচন পরিচালনা শাখা) মো. আতিয়ার রহমান বলেন, আইনি কোনো জটিলতা নেই। নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা নেই বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। এখন ইসি যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা বাস্তবায়ন করব আমরা। নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমান জানান, কমিশনের সিদ্ধান্তের পরে তফসিল হলে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে। তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও রয়েছে। পৌরসভা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন হওয়ার পর ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচন। নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হয় সেবার। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ভোট হয়।