নুনেরটেকে চরম উত্তেজনা! এক কিশোরীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় শিক্ষিকার উপর হামলা
নিজস্ব সংবাদদাতা, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল নুনেরটেকের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে। এমনকি পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করছেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তজনা বিরাজ করছে।
হামলার শিকার হওয়া ঐ শিক্ষিকা মরিয়ম আক্তার পাখীর পক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার উদ্ধবগঞ্জ এলাকায় সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সামনেক মানববন্ধন করেছেন সামাজিক সংগঠন তারুণ্যের সোনারগাঁ।
এদিকে কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ওই মেয়ের খালুকে মারধর ও মিথ্যা অভিযোগে গ্রামবাসীকে পুলিশ হয়রানীর প্রতিবাদে আগামীকাল ৩০ জানুয়ারি রবিবার মানববন্ধ করার ঘোষনা দিয়েছেন এরশাদ নগর, সবুজভাগ, গুচ্ছ গ্রাম ও চুয়াডাঙ্গা গ্রামের লোকজন।
সরেজমিন জানাযায়, গত ২২ জানুয়ারি শনিবার রাতে এক কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ওই মেয়ের খালুকে মারধর করেন নুনেরটেক গ্রামের মহি উদ্দিনের ছেলে মোঃ শরীফসহ দুই বখাটে কিশোর। খবর পেয়ে এলাকাবাসী মোঃ শরীফের বাড়িতে গিয়ে তাকে গণধোলাই দেন। এ সময় বখাটে মোঃ শরীফের বোন শিক্ষিকা মরিয়ম আক্তার পাখী ও তার পরিবারের লোকজন তাকে বাঁচাতে চেষ্টা করেলে শরীফের বোন মরিয়ম আক্তার, তার আরেক ভাই রাশেদ ও মা নাছিমা আহত হন। এ ঘটনার পর গত রোববার শরীফ বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় ১৬ জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ ছাড়াও ওই কিশোরীর পক্ষ থেকে তার খালু সোমবার রাতে উত্ত্যক্ত ও অপহরণচেষ্টার জন্য শরীফ, শাকিল ও রাসেলের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিশোরীটিকে নুনেরটেক গ্রামের মহি উদ্দিনের ছেলে মোঃ শরীফ এক বছর ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছিল। ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কিশোরীটিকে শরীফ বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করত। গতশনিবার রাতে শরীফ কিশোরীর বাড়িতে যাওয়ার পর কিশোরীর খালু তাঁর ভাগনিকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করেন। এ সময় শরীফ ও তার বন্ধু কিশোরীর খালুকে মারধর করেন। পরে এলাকাবাসী ছুটে এসে শরীফ ও শাকিল মিয়াকে গণধোলাই দেন। এ সময় শরীফের বোন মরিয়ম আক্তার, তার আরেক ভাই রাশেদ ও মা নাছিমা বেগম উত্তেজিত হলে এলাকাবাসী তাঁদেরও মারধর করেন।
হামলার শিকার হওয়া শিক্ষিকা মরিয়ম আক্তার পাখী জানান, সোনারগাঁ উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল অবহেলিত নুনেরটেকে সমাজকর্মী কবি শাহেদ কায়েস মায়াদ্বীপের সুবিধা বঞ্চিত জেলে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। পাশাপাশি তিনি আমাদের এই এলাকায় মেঘনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। এতে এখানকার একটি মহল শাহেদ কায়েস ও তার স্কুলের প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে স্কুলটি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়। এর জের ধরে গত ২২ জানুয়ারি শনিবার রাতে স্কুলের আমার ও আমার দেড় বছর বয়সী মেয়েসহ আমাদের পরিবারের ৫জনকে পিটিয়ে আহত করে স্থানীয় বালু সন্ত্রাসীরা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলেলে তারা জানান, কবি শাহেদ কায়েস স্যারের মায়াদ্বীপ স্কুলে কোন মারামারি হয় নাই। ঘটানা যা ঘটেছে তা মেয়ে সংক্রান্ত বিষয়।
এ ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ইউএনও তৌহিদ এলাহী ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি ) গোলাম মুস্তাফা মুন্না।