দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন যে শুধু হালকা অসুস্থতা তৈরি করবে তা চূড়ান্তভাবে ভাবে বলার সময় এখনো আসেনি।
বিজ্ঞানীরা বলেন যে, ওমিক্রন আসলেই কতটা ভয়ংকর তা এখনই বলা কঠিন, কারণ এটি এখনও পর্যন্ত বেশিরভাগই অল্পবয়সীদের আক্রান্ত করেছে, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো এবং যারা জীবাণুটির বিরুদ্ধে লড়াই করতে বেশি সক্ষম। তবে, ভাইরাসটি কয়েকদিন শরীরে বহন করার পরে গিয়ে লোকের অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
এর আগে দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজেস বলেছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রনে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা মাত্র গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৮,৫৬১ জনে দাঁড়িয়েছে। ওমিক্রন এখন দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রধান ধরন।
এনআইসিডি-র জনস্বাস্থ্য নজরদারি বিভাগের প্রধান মিশেল গ্রুম বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অল্প বয়সীদের মধ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ ঘটেছে। তবে এখন আমরা বয়স্কদের মধ্যেও ওমিক্রনের সংক্রমণ দেখতে শুরু করেছি। আমরা আরও আশা করছি যে, আগামী আরও কয়েক সপ্তাহ ওমিক্রনের ফলে কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা যাবে না’।
কেআরআইএসপি জিনোমিক্স ইনস্টিটিউটের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ রিচার্ড লেসেলস বলেছেন যে, অনেক লোক ইতিমধ্যে করোনার অন্য ধরনগুলোতে সংক্রামিত হয়েছেন বা টিকা নিয়েছেন, এই কারণেও ওমিক্রনের ফলে সৃষ্ট রোগের তীব্রতা বুঝা যাচ্ছে না হয়তো’।
তিনি বলেন, ‘ওমিক্রন যখন টিকা নেয়নি এমন লোকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে তখনই এর আসল চেহারা দেখা যাবে। তখনই এটি কতটা ভয়ঙ্কর তা বুঝা যাবে’।
ওদিকে, যুক্ত্ররাষ্ট্রেও ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে ওমিক্রনে আক্রান্ত প্রথম রোগী সনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগবিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি।
বুধবার হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করেন ফাউসি জানান, অমিক্রনে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি গত ২২ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। ২৯ নভেম্বর কোভিড পজিটিভ হন। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা।
সব মিলিয়ে বিশ্বের এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২৪টি দেশে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী ধরে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আগে বতসোয়ানা, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ইসরায়েল, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নরওয়ে ও সৌদি আরবে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী ধরা পড়েছে।