‘কোন শ্রমিক অপরাধ না করলেও মামলা হয়ে যায়, কিন্তু মালিক অপরাধ করলে শাস্তি হয় না। আমি পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে বলবো আপনারা এই মালিকের সাথে যোগাযোগ করেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে আমাদের শ্রমিকদের পাওনার বিষয়টা নিশ্চিত করে দেন। না হলে আমরা প্রশাসনের সামনে আমরণ অনশন করবো।’
পাওনা পরিশোধের দাবিতে ওপেক্স অ্যান্ড সিনহা গার্মেন্টসের শ্রমিকদের পক্ষে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিকালে নগরীর চাষাঢ়া শহীদ মিনারে এ বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল।
তাঁর ভাষ্য মতে, ‘আজকের এ সমাবেশ কোন রাজনৈতিক দল বা সরকারের বিরুদ্ধে না। আজকের সমাবেশ বেঁচে থাকার সমাবেশ। আমাদের চাকরি আজ নাই, কোথা থেকে বেতন নিবো, ঘর ভাড়া দিবে আমরা জানি না। ’
ওপেক্স এন্ড সিনহা টেক্সটাইল গ্রুপটি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় অবস্থিত। কারখানাটিতে প্রায় ১১ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা জানান, গত কয়েক মাস যাবৎ মালিক পক্ষ বেতন দেই, দিচ্ছি করে কাটিয়ে দিয়েছেন। শ্রমিকরা গত ১২ সেপ্টেম্বর বকেয়া বেতন ও ছুটির টাকার দাবিতে আন্দোলন করলে মালিক কর্তৃপক্ষ নোটিশের মাধ্যমে জানান, ২২ সেপ্টেম্বর টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু ২২ সেপ্টেম্বর বেতন আনতে কারখানার সামনে গেলে মালিক বেতন পরিশোধ করেনি। এ ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর বেতন চাইতে গিয়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে শিল্প পুলিশের মধ্যস্ততায় ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখ বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু সেদিনও দেওয়া হয়নি। অবশেষে ১৯ অক্টোবর শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ না করেই কারখানাটি বন্ধ করে দেন মালিক পক্ষ।
অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, ‘কথা ছিলো অক্টোবর মাসের মধ্যেই ওনাকে জানাতে হবে যে, ফ্যাক্টরি চালাবেন নাকি না। বেতন নিয়ে টাল-বাহানা চলবে না। আর যদি বন্ধ করেদেন, তাহলে শ্রম আইন অনুযায়ী- শ্রমিকের সকল পাওনা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু আইন অনুযায়ী বন্ধের নোটিশ ঝুলালেও পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে না। আগামী সাত দিনের মধ্যে আমাদের শ্রমিকদের পাওনার বিষয়টা নিশ্চিত করে দেন। না হলে আমরা প্রশাসনের সামনে আমরণ অনশন করবো।’
সমাবেশে জেলা গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি এম এ শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, শ্রমিক জাগরণ মঞ্চের সংগঠক জাহাঙ্গীর আলম গোলক, সিনহা গার্মেন্টসের শ্রমিক মোহাম্মদ আলী, কেন্দ্রীয় নেত্রী শবনাম হাফিজ, শ্রমিক সংহতি আন্দোলনের নেতা কাউসার আহমেদ, কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বপ্না আক্তার, হালিমা বেগম, মো. আনিছ, মো. শহিদুল ইসলাম, মাঈদুল, মো. আওলাদ হোসেন, মো. রানা বক্তব্য রাখেন।