নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব। বিএনপি নেতাদের মদদেই চলছে এসব দখল, চাঁদাবাজি ও লুটপাট। সম্প্রতি নেতাদের পক্ষ-বিপক্ষের বক্তব্য বিবৃতি থেকে একের পর এক বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। মুলত ২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর শহর থেকে পাড়া মহল্লায় বেপরোয়া বিএনপির একশ্রেনীর নেতা, তাদের স্বজন এবং ভুইফোড় পাতি নেতারা। এসব আচরণে অতিষ্ঠ জনগন। বিরক্ত দলের হাইকমান্ড। হতাশ দলের প্রকৃত ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
গত ২৯ জুলাই (মঙ্গলবার) বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় ” সোনারগাঁয়ে যুবদলের দুই নেতার মাসিক কোটি টাকার চাঁদাবাজি” শিরোনামে নিউজ প্রকাশ হলে এলাকায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। সেখানে কাঁচপুর ও মেঘনা শিল্প নগরীর বিভিন্ন কারখানা, পরিবহন থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয় সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শহিদুর রহমান স্বপন ও যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ প্রধানের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে পরদিন বুধবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুবদলের ওই নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও তার ছেলে জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজিব এর নেতৃত্বে মেঘনা শিল্পনগরী এলাকার ৩৮টি কারখানা দখল করে চাঁদাবাজি করছেন। এছাড়াও শিল্পকারখানা ছাড়াও মেঘনা নদীতে চলাচলরত নৌপরিবহন থেকে, বিভিন্ন ঠিকাদার থেকে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠা থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে, চোরাই তেলের ব্যবসাসহ দখল বাণিজ্যেরও অভিযোগ আনেন তাদের বিরুদ্ধে।
সংবাদ সম্মেলনে সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ প্রধান বলেন, এ দেশের মানুষ সংবাদের মাধ্যমে প্রমাণ পেয়েছেন এ এলাকায় কারা চাঁদাবাজি, দখলবাজি, লুটপাট, চোরাই তেলের ব্যবসা, নৌ চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কাজ করে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এখানকার এমপি পদপ্রার্থী এক নেতা পিরোজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন ওরফে পলিথিন জাকিরের সাথে হাত মিলিয়ে তার ভাই-ভাতিজারা ৫ আগস্টের পর থেকেই শুরু করেন নৌ-চাঁদাবাজী ও ডাকাতি।
গত কয়েকদিন আগেও ৬জন নৌ চাঁদাবাজ হিসেবে নৌ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। গত দুইদিন আগেও ডাকাতি করতে ৩ জন ধরা পরে। তারা কার নির্দেশে এসব করেছে নিজেরাই স্বীকার করেছে। এই ভিডিও ফেইসবুকেও ভাইরাল হয়েছে।
আশরাফ প্রধান অভিযোগ করেন, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও তার ছেলে সজিব মেঘনা শিল্পনগরী এলাকার ৩৮টি কারখানা দখল করেছে। মেঘনা গ্রুপের সকল অঙ্গ প্রতিষ্ঠান, বসুন্ধরা গ্রুপ, ইউনিক গ্রুপসহ আরো অনেক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান এখন এই পরিবারের দখলে।
তাদের একনিষ্ঠ অনুসারী রফিকুল ইসলাম বিডিয়ার, জয়নাল মেম্বার, তমিজউদ্দিন হোলসিমসহ সব সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, ক্যামিকেল কারখানা দখল করেছে।
আমরা দুই ভাই মাত্র তিনটি মিল দখল করেছি। অথচ আজহারুল ইসলাম মান্নান এর ভাই, ভাতিজা আল আমিন ও মাসুদ চোরাই তেলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রন এবং ফুটপাত থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা কালেকশন করেন।
তার ছেলে সজিব নৌ-চাঁদাবাজী নিয়ন্ত্রন ও বিভিন্ন কোম্পানির ঠিকাদারদের থেকে প্রতিমাসে ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। নজরুল ও শরীফ কন্টাক্টর এর ভুক্তভোগী বলে দাবি করেন আশরাফ প্রধান। সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের নির্দোষ ও ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন তারা।