সোনারগাঁয়ের খবর

মেঘনা শিল্পাঞ্চলের চাঁদাবাজি: আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া শামসু

নিজস্ব প্রতিবেদক :


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন যেন টাকার খনি। এনিয়ে নানা মুখরোচক গল্প সোনারগাঁয়ের মানুষের মুখে মুখে। বিশেষ করে শিল্পঘন এলাকা হওয়ায় এবং বহিরাগত শ্রমিক নির্ভর হওয়ায় এখানে চাঁদাবাজি দখলবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আর এসবকে ঘিরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও দুর্বৃত্তদের উত্থান।

বিশেষ করে মেঘনা নিউ টাউন ও টোলপ্লাজা এলাকাকে ঘিরে চলে আধিপত্য বিস্তারের খেলা। যেখানে বাস, ট্রাক সিএনজি অটোরিকশা থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকান সবগুলো থেকেই উঠছে নিয়মিত চাঁদা। লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজির ভাগ নিয়ে ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের মধ্যে শীতল যুদ্ধ চলে সব সময়। বিশেষ করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাহফুজুর রহমান কালাম চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়ার পর মেঘনা এলাকার চাঁদাবাজিতে জোরপূর্বক নিজের আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া আওয়ামী লীগ‌ নেতা শামসুজ্জামান শামসু। পিরোজপুর ইউনিয়নের ঝাউচর গ্রামের রবি বেপারির কনিষ্ঠ ছেলে শামসু সম্প্রতি মেঘনা শিল্প এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।

ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম এর আস্থাভাজনদের সরিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া শামসু।

সরেজমিন মেঘনা নিউ টাউন ও টোল এলাকা ঘুরে জানাযায়, টোলপ্লাজা এলাকায় সিএনজি ও অটোরিকশা স্ট্যান্ডে এতদিন শুক্কুর নামে এক ব্যক্তি স্ট্যান্ড‌ পরিচালনার‌ জন্য দৈনিক দুই হাজার টাকা তুলে তা স্থানীয় মসজিদ ও মাদ্রাসার এতিমখানায় দিয়ে দিতেন। মাসখানেক ধরে এই স্ট্যান্ড থেকে উত্তোলিত চাঁদা নিচ্ছেন শামসু। তার ভাই আজিজুল বাস, ট্রাক, সিএনজি অটো চালকদের থেকে চাঁদা সংগ্রহ করছেন।

এছাড়াও নিউটাউন মার্কেট এর সামনের ফাঁকা অংশ এবং বেপারি বাজার মার্কেটের সামনের সড়কে ফুটাপাত এবং আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠা শতাধিক টং দোকান ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের থেকেও জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছে শামসুর লোকজন। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালেই তাকে নির্যাতন হয়রানির অভিযোগ করেছেন একাধিক দোকানি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মেঘনা নিউ টাউন এলাকায় নিজের আধিপত্য দেখাতে প্রায়ই এই এলাকায় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন শামসু।

তবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই এই এলাকায় একক আধিপত্য ধরে রেখেছেন। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের এক নং সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তার অনুসারী শামসুজ্জামান শামসু পিরোজপুর ও মেঘনা এলাকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে জোর চেষ্টা চালান। এমন অবস্থায় যেকোন সময় মাসুম চেয়ারম্যান অনুসারীদের সঙ্গে শামসু বাহিনীর বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে।

এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এখন হাইব্রিডদের দাপট তুঙ্গে। তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায়। তারা দল ও দেশের চিন্তা না করে নিজের স্বার্থে সব করছে। এদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। যে সন্ত্রাসীরা চাঁদাবাজি করে জনগণের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। জনগন তাদের উচিত জবাব দিবে।

Related Articles

Back to top button