বিএনপির এক দফা দাবির সমাবেশে আগত জনসমুদ্রকে নতুনত্ব কিছু দিতে পারেনি বিএনপি নেতারা। নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করতে পারেনি তারা। তাদের এক দফা কি? তা যেন স্পষ্ট করতেই পারেনি বিএনপি নেতারা তাদের বক্তব্যে।
বিএনপির এক দফা দাবি ঘোষণা করতে বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বেলা দুইটার দিকে আয়োজিত সমাবেশ শেষে ফেরার পথে বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থরা এসব কথা বলেছিলেন।
তাহলে কি ছিল, তাদের বক্তব্যে এমন প্রশ্নের জবাবে? জানাযায়, বিএনপি ঘোষিত সেই দশ দফাই গুড়িয়ে পেঁচিয়ে বলতে গিয়ে জগাখিচুড়ি মার্কা বক্তব্য হয়ে গিয়েছে। বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে আগত মানুষরা কোন নতুনত্ব কিছু পায়নি। গত কয়েক মাস ধরে বিএনপির পক্ষ থেকে যেসব দাবি জানানো হচ্ছিল, এক দফা সমাবেশে সেগুলোই তুলে ধরা হয়েছে।
এদিকে বিএনপি তাদের এক দফা দাবি কি তা ঠিক করে বলতে না পারলেও, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঠিক বুঝে নিয়ে বলে দিলেন বিএনপির এক দফা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আমাদের এক দফা শেখ হাসিনাকে ছাড়া নির্বাচন হবে না।
তবে বিএনপি’র ডাকা এক দফা এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে দেখা গেছে অভাক করা মানুষের ঢল! যেন ঢাকা শহর এক বিশাল জনসমুদ্র। এই জনসমুদ্র পরিবর্তনের বিজয়, অনিয়মের বিরুদ্ধে জনতার রুখে দাঁড়াবার বিজয়।
অপরদিকে, বিএনপির পাল্টাপাল্টি বুধবার দুপুর দেড়টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামীলীগ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। আওয়ামী লীগের সেই শান্তি সমাবেশ হয়ে উঠে অশান্তির সভায়। বুধবার দুপুর দেড়টায় মঞ্চের সামনে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে বিকাল ৩টায় শুরু হয়। তবে এর আগেই দুই পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। এ সময় মঞ্চে থাকা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা সবাইকে শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানান। তাতেও কাজ না হওয়ায় কয়েকজন নেতা মঞ্চ থেকে নেমে এসে উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করেন।
জানাযায়, আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশের এ কর্মসূচিতে বিশৃংলায় জড়িত দুই পক্ষই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে এসেছে। তারা পৃথক মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসে। মঞ্চের সামনে রাখা চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়।
মঞ্চে উপস্থিত মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, পৌনে ২টার দিকে মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মন্নাফী ভাইয়ের সমর্থকরা মঞ্চের সামনে চেয়ার বসে যান। এ সময় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষে একটি মিছিল মঞ্চের সামনে চলে আসে, তখন বসাকে কেন্দ্র করে চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
বিশৃংখলা দেখা দিলে আওয়ামী লীগ নেতারা মাইকে বলেন, এখানে সিসি ক্যামেরা আছে, ড্রোন ক্যামেরা আছে। যারা বিশৃংখলা করার চেষ্টা করছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই শান্তি সমাবেশ বিকাল ৩টায় শুরু হয়, চলে ৫টা পর্যন্ত। এতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।