সোনারগাঁয়ের খবর

দুই শহীদের পিতার আর্জি : রাষ্ট্র যেন আমার সন্তানের কথা মনে রাখে

নিজস্ব প্রতিবেদক :


বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার দুই শহীদের পরিবারের শোক কাটছেইনা। ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার মুক্ত নতুন বাংলাদেশ উদযাপন করছে জনগন। অনেক তরুণ প্রান ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই
কোটা আন্দোলনের অন্যতম শহীদ সোনারগাঁয়ের মেহেদী ও ইমরান।‌

জিস্ট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মেহেদী আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ২০ জুলাই চিটাগাং রোডের ডাচ বাংলা মোড় এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন।

আর মেঘনা শিল্পনগরী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান নিহত হন ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে।

হতদরিদ্র মেহেদীর বাবা মো: ছানাউল্লাহ সোনারগাঁয়ে একটি কারখানায় দিন মজুরের কাজ করেন। আর শহীদ ইমরানের বাবা সালেহ আহমেদ মেঘনা টোলপ্লাজা সংলগ্ন ব্যাপারি বাজারে ছোট একটি দোকান চালান।

গতকাল বিকেলে ক্ষতিগ্রস্ত এই দুই শহীদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে একজন প্রবাসী। সোনারগাঁয়ের কৃতিসন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ওসাকা ফার্মাসিউটিক্যালসের মুখ্য বিজ্ঞানী ডক্টর শাহানুর হোসাইন দেড় লাখ টাকা অর্থ সহায়তার মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ান।

এই অর্থ পরিবারের কাছে তুলে দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ সমন্বয়ক খালেদ হাসান, চেন্যাল আই এর সাংবাদিক আকতার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য দেওয়ান হারুনুর রশিদ, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আফজাল হোসেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

এ সময়, শহীদ মেহেদির বাবা সানাউল্লা মিয়া এবং শহীদ ইমরানের বাবা সালেহ আহমেদ দেশবাসীর কাছে তাদের সন্তানের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া চেয়েছেন এবং পাশাপাশি রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন তাদের সন্তানদের অবদানকে স্মরণ করা হয় সেই আকুতি জানিয়েছেন।

এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সহ সমন্বয়ক খালিদ হাসান বলেন, একজন সহকর্মী ও রাজপথের সহযোদ্ধাকে হারিয়ে শোকাহত গোটা ছাত্রসমাজ। ছাত্রদের এই অর্জনকে যেন কেউ বিপথে নিতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি। বিশেষ করে পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন এলাকায় নৈরাজ্য ও উদ্দেশ্যমূলক হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে কাউকে যেন হয়রানি করা না হয়। সে ব্যাপারে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।

এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ ইমতিয়াজ বকুল বলেন, শত শত তরুণের তাজা প্রাণ ও রক্তের বিনিময়ে
আজকে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। এই অর্জনের একমাত্র কৃতিত্ব শিক্ষার্থীদের আমাদের সন্তানদের। আমরা যা গত১৫ বছরে পারিনি আমাদের সন্তানেরা তা করে দেখিয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক সুযোগ-সন্ধানী সেই কৃতিত্বের ভাগ বসাতে চাইছে। মানুষকে হয়রানি ও নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট হয়েছে এদের থেকে সবাইকে সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে।

সবশেষ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ ইমতিয়াজ বকুল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে সবাইকে আহ্বান জানান।

Related Articles

Back to top button