আজ ১৯ জুলাই সােমবার (সৌদি আরবে ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ। করােনা মহামারীর কারণে নাকাল বিশ্বে এ বছরও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে পালিত হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত পবিত্র হজ।
মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর আত্মত্যাগের পুণ্য স্মৃতিবিজড়িত পবিত্রতম এ দিন। আজ ধর্মীয় বিধান মােতাবেক নিজেদের পাপমুক্তি ও আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনা নিয়ে করােনাকালের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র হজব্রত পালন করছেন মাত্র ৬০ হাজার মুসলমান।
মহামারী করােনার কারণে এবারও সৌদি আরবে হজ করতে যাওয়ার অনুমতি পাননি বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তবে সৌদি আরবের নাগরিকসহ সে দেশে অবস্থানরত বিশ্বের ১৫০ টি দেশের নাগরিক মিলিয়ে মােট ৬০ হাজার মানুষ এবারের হজে অংশ নিচ্ছেন।
গত বছরও চলমান করােনা পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে পালিত হয়েছিল পবিত্র হজ।
আজ আরাফাতের ময়দানে সমবেত হাজীদের রােদনভরা কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক; লা শারিকা লাক’। অর্থাৎ আমি হাজির, হে আল্লাহ ! আমি হাজির, তােমার কোনাে শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তােমারই, সব সাম্রাজ্যও তােমার, ‘শুধু তােমার ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভের জন্য আমরা এখানে সমবেত হয়েছি।
আজ ফজরের নামাজ আদায় শেষে মিনা থেকে হাজীরা সমবেত হয়েছেন আরাফাতের ময়দানে। হাজীদের ( পুরুষ ) পরনে শুধু সেলাইবিহীন সাদা দুই খণ্ড বস্ত্র (এহরাম)। এখানে তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন।
এ সেই আরাফার ময়দান, যেখানে দেড় হাজার বছর আগে দাঁড়িয়ে মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশ্যে খুতবা দিয়েছিলেন আল্লাহর প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
বিদায় হজের খুতবায় নবীজি ঘােষণা করেছিলেন, আজ থেকে ইসলামকে পরিপূর্ণ ধর্ম ঘােষণা করা হয়েছে। আল্লাহতায়ালার কাছে একমাত্র মনােনীত ধর্ম ইসলাম। আজ সব হাজীর মনে প্রিয় নবীর সেই বিদায় হজের ভাষণের অনুরণন।
সৌদি পঞ্জিকা অনুযায়ী গতকাল রবিবার (৮ জিলহজ ) থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। গতকাল সারা দিন মিনায় অবস্থান করেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে হাজীরা।
এই সেই মিনার প্রান্তর যেখানে পৃথিবীর আদিপিতা হজরত আদম (আ.) ও মাতা হজরত বিবি হাওয়া (আ.) আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ক্ষমার পয়গাম লাভ করেছিলেন।
এই সেই প্রান্তর বেহেশত থেকে পৃথিবীতে নামিয়ে দেওয়ার পর যেখানে আদিপিতা-আদিমাতা একত্রিত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন। সেই মিনার প্রান্তরে আজ সমবেত তাঁদের উত্তরসূরি ধর্মপ্রাণ মানবজাতির প্রতিনিধিত্ব করছেন আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) – এর উম্মতরা (অনুসারী)।