হরি লুটের কারখানায় পরিণত হয়েছে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
ফাহাদুল ইসলাম :
জনবল ও চিকিৎসা উপকরণের সঙ্কট নেই সরকারী হাসপাতালে। রয়েছে মজবুত অবকাঠামো। নামমাত্র খরচে পাওয়া যায় উন্নত চিকিৎসাসেবা। কিন্তু সাধারণ মানুষের অনেকেই জানে না সরকারী হাসপাতালে কিভাবে, কি ধরনের চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায়। এ নিয়ে অনেক সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং রোগী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়, ঘটে যায় অনেক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা।
কোন কোন ক্ষেত্রে সরকারী চিকিৎসা সুবিধার বিষয়ে ধারণা না থাকায় প্রাপ্য চিকিৎসাসেবা আদায় করে নিতে পারেন না অনেক রোগী। এ সুযোগে অনভিজ্ঞ রোগীদের কাছ থেকে বিনা টাকার চিকিৎসার ক্ষেত্রেও অর্থ আদায় করেন হাসপাতালের কিছু সংখ্যক অসাধু চক্র।
এতে বিনা টাকার সরকারী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয় সাধারণ মানুষ, যা সরকারী ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। অথচ দেশের স্বাস্থ্য সেক্টরের ব্যাপক উন্নয়ন আজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
সারাদেশে বিস্তারলাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিনামূল্যের সরকারী চিকিৎসাসেবা নিয়ে কোন ধরনের অবৈধ ব্যবসা, অনিয়ম ও দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকারের আন্তরিকতার কমতি নেই। স্বাস্থ্যখাতে যুগান্তকারী সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সহস্রাব্দ অর্জনেও এদেশের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। প্রশংসিত হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে। দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক। এমন মজবুত অবকাঠামোর ওপর দাাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাত্রার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, কমিউনিটি ক্লিনিক চালু, স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। দেশের ৯৯ ভাগ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা।
সরকারের এত সুযোগ সুবিধা জনগণের জন্য দেওয়া হলেও সরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের কারণে নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে সাধারণ জনগণকে।
এভাবে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীদের কাছ থেকে নেওয়া হয় অর্থ। সাধারণ মানুষ অজ্ঞতা থাকায় একটি চক্র রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
জানা যায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যক্ষা রোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে অথচ যক্ষা রোগীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয় সেখানে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যক্ষা রোগের চিকিৎসক ডাঃ খাইরুল
রোগীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে আদায় করছে। সোনারগাঁ এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সময়ে অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার নানা অভিযোগ থাকলেও কোনোভাবেই থামছে না তাদের কারচুপি। হরি লুটে পরিণত হচ্ছে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (আরএমও) আবাসিক কর্মকর্তা বলেন, যক্ষা রোগীদের কাছ থেকে কোন টাকা নেওয়া তো কথা না কিন্তু যে নিয়ে থাকে সেটা অন্যায় হয়েছে, যক্ষা রোগীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয় এখানে। এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা, আমি অবশ্যই এর সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।