নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলা মুক্ত দিবস আজ ১৪ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে মিত্র বাহিনী পাক হানাদারদের বিতারিত করে সোনারগাঁকে মুক্ত করে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, যুদ্ধ চলাকালিন সময়ে পাক সেনারা সোনারগাঁয়ে থাকা অবস্থায় পিরোজপুর গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত আগুনে পুড়িয়ে ভষ্ম করে দেয়। আর তাদের দোসররা বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ধান, চাউল, গরু-বাছুর এমনকি ঘরের টিনসহ ব্যপক লুটপাট চালিয়ে সর্বশান্ত করে। পাক সেনা ও তাদের দোসরদের ভয়ে সবকিছু ফেলে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোন রকমে জীবন বাঁচানোর জন্য পালিয়ে বেড়ায় জৈনপুর, পিরোজপুর, কান্দারগাঁও, ছয়হিস্যা ও রতনপুরসহ পিরোজপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের হাজার হাজার নিরীহ নিরস্ত্র মানুষ। পরে ভারতীয় মিত্র বাহিনী হেলিকপ্টারে এসে কান্দারগাঁও এলাকায় নেমে হানাদারদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। সোনারগাঁ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সোহেল রানা ও ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গণি জানান, মূলত সোনারগাঁ যেদিন মুুক্ত হয়েছিল সেদিন ছিল ১৩ ডিসেম্বর। মিত্র বাহিনী দুপুরের দিকে পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও-ভবনাথপুর এলাকার মাঝখানে হেলিকপ্টার থেকে নেমে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পাক পাক হানাদারদের ধাওয়া করলে তারা ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়। পরে ১৩ তারিখ রাতেই সোনারগাঁবাসীকে হানাদার মুক্ত হিসেবে আশ্বস্ত করে চলে যায় মিত্র বাহিনী। যেহেতু ১৩ তারিখ রাত পর্যন্ত হানাদারদের ধাওয়া করা হয় এবং সোনারগাঁ মুক্ত হিসেবে পরদিন সেনা সদর দপ্তরে রিপোর্ট করা হয়, সে হিসেবে সেনা সদর দপ্তরের প্রেরিত প্রতিবেদন ও তথ্য অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর মুক্ত ঘোষণা করা হয় সোনারগাঁ উপজেলাকে।