এক মাসের বকেয়া থাকলে মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার অফিসে নিয়ে যান। সেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা বিভিন্ন খাত দেখিয়ে আদায় করে থাকেন। সেই টাকা থেকে ডিজিএম টাকা নিয়ে থাকেন।
গ্রাহকরা আরো জানায়,পল্লী বিদ্যুতের নিয়ম অনুযায়ী তিন মাসের অধিক সময় বিল পরিশোধ না করলে গ্রাহকদের নোটিশ প্রদান করতে হয়। ডিজিএম নোটিশ না করেই গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে থাকেন। সেই মামলা নিষ্পত্তি করতে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। সিন্ডিকেট করে এসব অপকর্ম করেন বলে জানিয়েছেন অত্র অফিসের একাধিক কর্মচারী।
এ সিন্ডিকেটের প্রধান হিসেবে কাজ করেন হিমেল ও আলমগীর হোসেন। এ সিন্ডেকেটে ডিজিএমসহ আরো ছয়জন রয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ ব্যবহারে বিভিন্ন সমস্যা ও ক্রুটি দেখা দিলে অভিযোগ কেন্দ্রে অভিযোগ দেওয়ার পরন সমাধানে গিয়ে আলমগীর ও হিমেল গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে সমস্যা বা ক্রুটি সমাধানের গড়িমসি করে থাকে। বিষয়টি ডিজিএমকে ফোনে জানালে উল্টো গ্রাহকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন ডিজিএম। এ বিষয়ে প্রতিকার চান গ্রাহকরা।
সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে ব্রহ্মণবাড়িয়া অফিসে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার জন্য ডিজিএম জসীমউদ্দিন চাকুরিচুত্য হয়েছেন। সম্প্রতি আদালতের মাধ্যমে চাকুরি ফিরে পেয়ে সোনারগাঁ যোগদান করে আবারো সেই অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় করে আসছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কয়েকজন কর্মচারী জানান, ডিজিএমের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করলেই অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়। তাছাড়া তার ভাই জেলা জজ হিসেবে কর্মরত আছেন। তার অনিয়মের প্রতিবাদ করলে মামলার হুমকি দেওয়া হয়।
কান্দারগাও গ্রামের গ্রাহক ও ইউএনও এর ব্যক্তিগত গাড়ী চালক আবু তাহের বলেন, এনালগ পর্চা দিয়ে তিনি নতুন মিটারের আবেদন করেন। ডিজিটাল পর্চা না দেওয়ার কারনে তার আবেদন বাতিল করে ডিজিএম। বিষয়টি জানতে তার দপ্তরে গেলে দাখিল করা কাগজপত্র ছুড়ে ফেলে তাকে কক্ষ থেকে বের করে দেন।
সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের গ্রাহক আমজাদ হোসেন বলেন, এক মাসের বিল বকেয়া থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার অফিসে নিয়ে যায়। অফিসে গেলে তার কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিলসহ অতিরিক্ত আরো তিন হাজার দুই শ টাকা আলমগীরের মাধ্যমে আদায় করেছেন। যার কোন রশিদ দেওয়া হয়নি।
নয়ামাটি গ্রামের গ্রাহক ও ছাত্রলীগ নেতা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, তার পোষ্টপেইড মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে প্রিপেইড মিটার সংযোগ দিতে যান বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা। সেখানে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হলে ডিজিএম তাকে গালিগালজ করেন।
অভিযুক্ত ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। কাজ করতে গিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা হয়। কে কোন দিন থেকে হয়রানি হচ্ছে আমার জানা নেই। এক পর্যায়ে অফিসে গিয়ে সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (সদর দপ্তর) প্রকৌশলী হরেন্দ্র নাথ বর্মন বলেন, তার বিরুদ্ধে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।