উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে আওয়ামীলীগের ১ নাম্বার সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম এখন সর্বত্র আলোচনার বিষয়।
তার সাথে চলছে উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। আলোচনায় বাদ পড়ছে না, মাহফুজুর রহমান কালাম সমর্থিত কর্মী-সমর্থকদের সাহসিকতা ও দৃঢ়তার বিষয়টিও।
ওসমান পরিবারের আশির্বাদপুষ্ট ও স্থানীয় এমপি, সবকয়টি ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যদের সমর্থিত প্রার্থী বাবুল ওমরকে বাদদিয়ে এবং সকল লোভ লালসাকে এড়িয়ে ভোটাররা উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন মাহফুজুর রহমান কালামকে। এই সাফল্যের পর সোনারগাঁ তথা নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে এখন কিং হয়ে দাঁড়িয়েছেন মাহফুজুর রহমান কালাম।
একাধারে প্রভাবশালী ওসমান পরিবারসহ সাবেক ও বর্তমান এমপি এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তার এই সাফল্য তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নয়া মুকুট যোগ করেছে। এতে রাজনীতির জয় হয়েছে, পেশীশক্তি ও অর্থশক্তির পরাজয় হয়েছে। আবারও প্রমাণ হয়েছে জনগণের কাছে কোন শক্তিই বড় নয়, জনগণের পছন্দই শেষ কথা।
তাই এই নির্বাচনে প্রভাবশালীদের এমন ভরাডুবির পর বিশ্লেষকদের ধারনা, সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতেও আসবে নয়া মেরুকরণ।
অন্যদিকে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল ওমর বাবুর শিবিরে দেখা দিয়েছে হতাশা এবং মীরজাফর, বেঈমানদের খোজা হচ্ছে ও তাদের ভূমিকা নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ।
আবার এই পরাজিত প্রার্থী বাবুল ওমরের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যাকে তার নিজের কৃতিত্ব নয় বরং প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগনের রয়েছে বিশাল ভূমিকা।
যদিও এটি উপজেলা নির্বাচন কিন্তুু প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের জন্য এটি ছিল তাদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের ক্ষেত্র। দলীয় প্রতিক ছাড়া নির্বাচনের একটি উদাহরণ।
প্রত্যেকটি রানিং চেয়ারম্যান অথবা সাবেক ও তার বিরোধী শিবিরের শক্তিমত্তা পরীক্ষার একটি ক্ষেত্র ছিল এই উপজেলা নির্বাচন।এই উপজেলা আওয়ামী লীগের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা ইঞ্জিনিয়ার মাসুম চেয়ারম্যানের ইউনিয়নেও বেশিরভাগ কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের ভরাডুবি হওয়ায় ভোটারদের কাছে তার শক্তিমত্তা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে নবনির্বাচিত এমপির আলোচিত নির্দেশগুলো নিয়েও।
একিভাবে দেখাযায় প্রতিটি ইউনিয়নেই প্রভাবশালী চেয়ারম্যানদের একচেটিয়া আধিপত্যের ভরাডুবি হয়েছে। তাই বলাই যায় নয়া রাজনৈতিক মেরুকরণের ফলে চেয়ারম্যানদের যে একক আধিপত্য ছিল তা আর থাকছে না।
একইভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ওসমান পরিবারের যে একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে সেটিও অনেকটা খর্ব হয়েছে। করণ সোনারগাঁয়ের ক্ষমতাসীন সবকটি নেতাই নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের আনুকূল্য ও সমর্থন পুষ্ট। অপরদিকে মাহফুজুর রহমান কালাম কোন সময়ই ওসমান পরিবারের সমর্থন বা আনুকূল্য পায়নি। তিনি নিজেও কখনও নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের শীষ্যত্য গ্রহণ করতে যান নাই।
তাই ধারণা করা হচ্ছে, বন্দর উপজেলায় যেমন ওসমান পরিবারের সমর্থিত প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে এবং মাহফুজুর রহমান কালামের বিজয়ে সোনারগাঁয়েও ওসমান পরিবারের একক আধিপত্য অনেকটা খর্ব হবে।