সোনারগাঁয়ের খবর

পরকিয়ায় অন্তঃসত্বা স্ত্রী, মিথ্যা মামলায় জেল খাটলেন প্রবাস ফেরত স্বামী

নিজস্ব সংবাদদাতা :


স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে বিদেশ যাওয়ার ২০ মাস পর প্রবাসী স্বামী জানতে পারে তার স্ত্রী ২ মাসের অন্তঃসত্বা। বিষয়টি জানতে পেয়ে জরুরী ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে আসলে সেদিনই তার স্ত্রী স্থানীয় মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে শালিস বৈঠকে স্বামীকে তালাক দিয়ে সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে রেখে চলে যায় বাপের বাড়ি।

তালাকের ২২ দিন পর স্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে প্রবাসী স্বামীর বিরুদ্ধে। সে মামলায় স্বামী রাসেল ১৩ দিন জেলখেটে জামিনে বের হয়। এমনই এক আজব ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্দর জিয়ানগর গ্রামে।

জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্দর জিয়ানগর গ্রামের মৃত আহসান উল্লাহর দুবাই প্রবাসী ছেলে রাসেলের সাথে বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া বৈদ্যপাড়া গ্রামের কামালের মেয়ে সানজিদা আক্তারের সাথে ২০১৯ সালে বিবাহ হয়। এ দম্পত্তির সাড়ে তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মা অসুস্থ থাকায় প্রবাসী রাসেল তার স্ত্রীর কাছেই টাকা পাঠাতেন। শেষবার তিনি দেশে আসেন ২০২১ সালের ১৩ জুলাই এবং দেশ ত্যাগ করেন একই বছরের ৪ ডিসেম্বর। বিদেশ যাওয়ার বিশ মাস পর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৩ আগষ্ট জানতে পারেন তার স্ত্রী ২ মাসের অন্তঃসত্বা। বিষয়টি জানার একদিন পর ৪ আগষ্ট দেশে চলে আসেন রাসেল। স্থানীয় মেম্বারের উপস্থিতিতে সালিশের মাধ্যমে তার স্ত্রী সানজিদা আক্তার বিদেশ থেকে দেশে ফেরার কয়েকঘন্টা পরে স্বামী রাসেলকে রেজিষ্ট্রি তালাক দেয়। বিদেশ থেকে পাঠানো রাসেলের ২১ লাখ টাকা ও স্বর্ণাঙ্কারের হিসেব না দিয়ে সাড়ে তিন বছরের কন্যাকে ফেলে বাপের বাড়ি চলে যায়। তালাকের ২২ দিন পর সানজিদা নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করেন। সে মামলায় ১৩ দিন হাজতবাস করে গত সপ্তাহে রাসেল জামিনে বেরিয়ে আসেন। বর্তমানে তার সাবেক স্ত্রী ও পরিবার হুমকিতে রাসেল তার ও শিশুকন্যাকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।

রাসেলের মা নাজমা বেগম জানান, আমি অসুস্থ থাকার সুযোগে ছেলের বউ পাশের বাড়ির স্বপনের লম্পট ছেলে ফয়সালের সাথে পরকিয়ায় আসক্ত হয়। ফয়সাল আমার ছেলের বউকে নিয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করালে দুই মাসের অন্তঃসত্বা ধরা পড়ে। পরে আমরা বিষয়টি জানতে পেরে রিপোর্ট সংগ্রহ করে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পাই। এছাড়া সে আমার দেবরের মোবাইল দিয়ে ঐ ছেলের সাথে বাচ্চা নষ্ট করার কথা বলে এ বিষয়টিও আমরা জানতে পারি। সে প্রসূতি দেখে গ্রামের মানুষ নানা কথা বললে আমার ছেলে বিদেশ থেকে চলে আসে। পরে ছেলের বউ আমার সাড়ে তিন বছরের নাতনীকে রেখে ছেলেকে সকলের সামনে স্বেচ্ছায় তালাক দিয়ে চলে যায় এবং তালাকের পরও সানজিদা আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। বর্তমানে আমরা তাদের ভয়ে আতঙ্কে আছি।

বিচার শালিস করা স্থানীয় মেম্বার আফজাল হোসেন বলেন, রাসেলের বউ সানজিদা পরকিয়ায় লিপ্ত হয়ে অন্তঃসত্বা হয়ে পড়ে এ বিষয়টি গ্রামের সবাই জানতে পারে। পরে ছেলে বিদেশ থেকে দেশে আসলে মেয়ে স্বেচ্ছায় রাসেলকে তালাক দিয়ে চলে যায়।

ভুক্তভোগী স্বামী রাসেল জানায়, বিয়ের পর থেকে সব টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার স্ত্রী সানজিদার কাছে পাঠিয়েছি। সে টাকা পাঠানোই আমার জন্য আজ কাল হয়েছে। বাড়িতে এখনো ভাঙ্গা ঘর। দালান করার জন্য স্ত্রীর কাছে নগদ একুশ লাখ টাকা পাঠাই।

রাসেল আরও বলেন, পরকিয়ার কারনে স্ত্রী অন্তঃসত্বা জানতে পেরে যেদিন দেশে আসি সেদিনই সে আমাকে তালাক দেয়। আমার টাকা পয়সার কোন হিসেব না দিয়ে আমার ছোট সন্তানকে রেখে চলে যায়। আমি মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

Related Articles

Back to top button