রোজিনাকে গলাকেটে হত্যা ও র্যাবের গুলিতে বৃদ্ধার মৃত্যু রহস্য
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :
সোনারগাঁয়ে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার মো. আব্দুস সেলিম (২৩) বিচারকের খাস কামড়ায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসে সেই রহস্য।
সে তার প্রেমিকা রোজিনা আক্তারকে (৩৩) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে। নারয়ণগঞ্জ আদালতের ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান বলেন, ইমরান মোল্লার আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করে আসামীকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। আব্দুস সেলিমকেই গ্রেপ্তার করার জন্য সোনারগাঁয়ের সাদিপুরের বরগাঁ গ্রামে অভিযান চালায় র্যাব। ওই সময় আসামী ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে গুলিতে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ মারা যায়।
গত শুক্রবার সকালে সোনারগাঁ উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের গজায়িরা পাড়া এলাকা থেকে রোজিনা আক্তার (৩৪) নামে এক নারীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় গত শুক্রবার দিবাগত রাতে বরগাঁ গ্রামে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে সেলিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আহসান উল্লাহ বলেন, গত রোববার সকালে সেলিমকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব । বিকেলে এই মামলায় আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের খাস কামড়ায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সেলিম।
আদালতের তথ্য সূত্রে জানা যায়, রোজিনা আক্তার ছিলেন ডিভোর্সী। তিনি ঢাকা থাকতেন। এরপর সে ঢাকা থেকে এসে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গাউছিয়া এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। ওই কারখানায় চাকরি করতেন সেলিমও। বয়সের পার্থক্য থাকলেও তাদের মধ্যে চাকরির সুবাদে সখ্যতা এবং সখ্যতা থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা একে অপরকে বিয়ে করবে বলেও সম্মতি দেয়। কিন্তু সেলিমের অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়। সোমবার সেলিমের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। সেলিমের বিয়ে ভেঙে দিয়ে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় রোজিনা। বিয়ে না করলে বাড়িতে গিয়ে অনশনসহ নানাভাবে হুমকি দেয় রোজিনা। তখনই রোজিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করে সেলিম।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাউছিয়া এলাকায় তারা ঘোরাঘুরি করে। সেখানকার ফুটপাত থেকে একটি ধারালো ছুরিও কিনে। জিজ্ঞেস করলে সে রোজিনাকে বলে, ফল কাটার জন্য ছুরি কিনেছি। পরে রোজিনাকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের গজারিয়াপাড়া এলাকায় যায়। ওইখানেরই একটি খোলা নির্জন স্থানে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে রোজিনার গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যার পর আরো কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে। এভাবেই আদালতের বিচারকের খাস কামড়ায় বসে সরল স্বীকারোক্তি দেয় ঘাতক সেলিম।
সোনারগাঁ থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত আহসান উল্লাহ জানান, গত শুক্রবার সকালে রোজিনার লাশ উদ্ধারের পর সেখান থেকে রক্তমাখা ছুরি পাওয়া যায় এবং এই হত্যাকান্ডে একাই আসামী সেলিম।