ফেলানী হত্যার বিচার হতেই হবে: জামায়াত আমির
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের কবর জিয়ারত করে তার বাবা-মায়ের সাথে দেখা করেছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার বিকালে তিনি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামখানা গ্রামে ফেলানীর বাড়িতে যান। এ সময় তিনি ফেলানীর কবর জিয়ারত করে ফেলানীর বাবাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন।
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর বলেন, সীমান্তে ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এ হত্যার সুবিচার হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে তৎপর ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ফেলানী হত্যার বিচার ত্বরান্বিত করবে এটা আমাদের দাবি। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ফেলানীকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছিল। ফেলানী হত্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, সারাবিশ্বের মানুষের বিবেক নাড়া দিয়েছিল। এটি সারাবিশ্বে একটি আলোচিত ঘটনা। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে। আন্তর্জাতিক আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার সুনিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয় ফেলানী খাতুন (১৫)। তার দেহ সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে ছিল। এ ঘটনায় গণমাধ্যমসহ বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থাগুলো প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। তবে ফেলানীর হত্যা মামলা এখনও ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে। এটি এখনও বিচারিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তার পরিবার এখনও ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করছে।
ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম নুরু কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি এখনও আমাদের মেয়ে ফেলানীর মুখচ্ছবি ভুলতে পারি না। আমার চোখের সামনেই বিএসএফের গুলিতে ফেলানীর মৃত্যু হয়। ন্যায় বিচার পেতে আমি ভারতে বহুবার গিয়েছিলাম কিন্তু সেই ন্যায়বিচার আমি পাইনি। বর্তমান সরকারের কাছে মেয়ে হত্যার বিচার চেয়েছেন তিনি।
ফেলানীর পরিবারের সাথে সাক্ষাতের সময় কেন্দ্রীয়, বিভাগ, জেলা ও স্থানীয় জামায়াতের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ডা. শফিকুর ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম নুরু, মা জাহানারা বেগম ও তিন ভাই জাহান উদ্দিন, আরফান আলী ও আক্কাস আলীর সাথে মতবিনিময় করে সবাইকে নতুন জামা-কাপড় উপহারসহ তাদের আর্থিক সহায়তা দেন।
পরে জামায়াত আমির ওই গ্রামের কলোনীটারী জামে মসজিদে স্থানীয় লোকজনের সাথে মতবিনিময় করেন। এরপর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে কদমতলা মোড়ে স্থানীয় জামায়াত নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।