নারায়ণগঞ্জ-৩, সোনারগাঁ আসনে নৌকার প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকে জেতাতে সব কোন্দল ভুলে এককাট্টা হয়ে আওয়ামী লীগের সব নেতারা বিশাল আনন্দ মিছিল করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে।
গত দুই সংসদ নির্বাচনে দীর্ঘ ১০ বছর পর এবার এ আসনে নিজ দলীয় প্রার্থী পেয়ে উচ্ছ্বসিত আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। এ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া চার প্রার্থীও নির্বাচন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে নৌকার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগকে একজোট করার কারিগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, ১০ বছর ধরে জাতীয় পার্টির লোকজনের কাছে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কর্মী–সমর্থকেরা নির্যাতিত হয়েছেন। এবার তাঁরা নিজেদের প্রার্থী পেয়ে খুশি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন কায়সার ভাইয়ের নেতৃত্বে আমরা সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ।
নৌকার প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত বলেন, জোটগত কারণে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী না দেওয়ায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী সংসদ সদস্য হয়েছেন। এবার দল আমাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী চেয়েছিলেন আমাকে সরিয়ে দিয়ে সংসদ সদস্য হতে। তিনি নির্বাচনকে ভয় পান। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে আরও ভয় পান। সোনারগাঁয়ের মানুষ ১০ বছর পর নৌকায় ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন।
এর আগে এ আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা টানা দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন। গত দুই সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাপার সমঝোতায় এখানে নিজেদের প্রার্থী তুলে নেয় আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকে দলীয় মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে শরিক ও মিত্রদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির পর আওয়ামী লীগ যে ২৬টি আসনে জাপাকে ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছে, সেই তালিকায় নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন নেই।
উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ এনামুল হক বিদুৎ বলেন, গত ২৬ নভেম্বর সোনারগাঁয়ে কায়সার হাসনাতকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পরও তারা স্বস্তিতে ছিলেন না। গত দুবারের মতো এবারও জাপাকে সোনারগাঁ ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে শঙ্কা ছিল তাঁদের। সেই শঙ্কা থেকেই কায়সার হাসনাত দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরও তাঁর স্ত্রী রুবিয়া আক্তার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এছাড়াও আরো তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। রোববার আসন ভাগাভাগির চূড়ান্ত ঘোষণার পর তাঁদের সেই শঙ্কা কেটেছে। বিভেদ ভুলে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ ১০ বছর পর নৌকাকে বিজয়ী করতে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে দলীয় চার স্বতন্ত্র প্রার্থীও নিজেদের সরিয়ে নিয়ে নৌকার পক্ষে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।