নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িতে পুলিশের হানার অভিযোগ
নিজস্ব সংবাদদাতা, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :
নারায়ণগঞ্জ জেলার শীর্ষ ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িতে ডিবি পুলিশ হানা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দিবাগত রাতে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও প্রশাসন জব্দ করেছে বলে অভিযোগ। এমন ঘটনা শুধু রিয়াদের সঙ্গেই ঘটেনি, ছাত্রলীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু, আহমেদ কাউসারের বাড়িতেও পুলিশ যাওয়া অভিযোগ মিলেছে। তবে এ বিষয়ে পুলিশ সুপার ও ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন করলে তারা বলেন, ‘তারা কিছুই জানেন না’।
রিয়াদের পরিবার জানায়, সদ্য বিলুপ্ত নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সরকারি তোলারাম কলেজের ভিপি হাবিবুর রহমান রিয়াদের (৩০) বাড়িতে, ফতুল্লা মাসদাইর বেকারীর মোড় এলাকায় শনিবার রাত ১০টায় প্রশাসনের ১০ থেকে ১৫ গাড়ি অবস্থান নেয়। তখন তারা রিয়াদকে খোঁজ করতে গেলে সামনে পড়েন রিয়াদের ভাইয়ের ছেলে সিয়াম (২২)। রিয়াদের বিষয়ে খোঁজ করলে সিয়াম বলেন, তিনি (রিয়াদ) বাড়িতে নেই। পরে ডিবির পোশাক পরিহিত পাঁচ থেকে ছয়জন তাকে এলোপাতাড়িভাবে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ এসে তাকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় ছাত্রলীগ থেকে সদ্য পদচ্যুত মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘ শনিবার দুপুরে ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে সভায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা এসেছেন। তাদের নিয়ে ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে প্রচারণার জন্য মতবিনিময় সভা করেছি। সভা চলাকালীন জানতে পারলাম, ছাত্রলীগের কমিটি কেন্দ্র থেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরেও আমরা সভা পরিচালনা করেছি। কিন্তু এখন রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করে আমার বাসায় ডিবি, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর ১৫ গাড়ি প্রশাসনের লোকজন এসেছে। তারা এসে বলেছে ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে প্রচারণা করার জন্য। তারা প্রচারণা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।’
রিয়াদ আরও বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগ করি, মহানগরের প্রেসিডেন্ট ছিলাম। যেহেতু ছাত্রলীগ করি, সেতু স্বাভাবিকভাবেই আমি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব। জননেত্রী শেখ হাসিনা যে মার্কা দিয়েছেন তার পক্ষে কাজ করব। শনিবার সকালেও সভা করেছি, আগামীকাল (রবিবার) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আসার কথা। একটি বড় আয়োজনের চিন্তা ছিল। ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মেয়র আইভীর পক্ষে ভোট চাইতে প্রচারণা চালাবে। কিন্তু শনিবার অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হঠাৎ কমিটি বিলুপ্ত করায়, বিষয়টি স্থবির হয়ে আছে। কিন্তু হঠাৎ করে প্রশাসনের এমন হানা দেওয়াতে আমার পরিবারসহ এলাকাবাসী আতঙ্কিত ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।’
‘সরকারি তোলারাম কলেজের ভিপির বাসায় কেন হঠাৎ করে ১৫ গাড়ি প্রশাসন নিয়ে হানা দেওয়া হয়, আমার জানা নাই। আমি এবং আমার নেতাকর্মীরা এমনিতেই মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে কাজ করছি। আমরা যদি ফোরাম করে থাকি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কোভিদ নানক, মির্জা আজম, খোকন সাহা, আনোয়ার হোসেন সনোলজি নেতাকর্মীরা আছে তাদের কাছে জবাবদিহি করব। আমরা ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের নাম পার্টি অফিসে জমা দিয়েছি। কিন্তু এর মধ্যে প্রশাসন দ্বারা হয়রানি করলে, নৌকার ভোট বাড়বে না কমবে আমার জানা নেই।’
রিয়াদ আরও বলেন, ‘আমি বহুদিন ধরে ছাত্রলীগ করি, তাই জেলায় ছাত্রলীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্ব প্রদানকারী হিসেবে সবাই আমাকে চেনে এবং জানে। আমি ঠিক আসলে বুঝতে পারছি না তারা কেন এ কাজটি করল। সরকারদলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে তারা যদি এমন করে, তবে মানুষ আতঙ্কিত হবে ও কষ্ট পাবে। নির্বাচনে যারা সরকারদলীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীর যদি এই অবস্থা হয় তবে সাধারণের কী হবে?