প্রধানমন্ত্রী ও জাতির পিতাকে নিয়ে বেফাঁস বক্তব্য ও কটূক্তি করায় বারদী ইউনিয়নের বিনা ভোটের চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল ওরফে চুম্মা বাবুল ফের বেকায়দায় পড়েছে।
এবার চেয়ারম্যান লায়ন বাবুলসহ নারায়ণগঞ্জের আলোচিত-সমালোচিত তিন চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। রবিবার (২৭ মার্চ) এই নোটিশ পাঠানো হয়।
জাতির পিতা এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বেফাঁস বক্তব্য দেয়ায় আইনানুযায়ী কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা আগামি ১০ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠাতে হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, তিন চেয়ারম্যানের শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হবে।
নোটিশ প্রাপ্ত চেয়ারম্যানরা হলেন নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়ন পরিষদের বিনা ভোটের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান লায়ন বাবুল ওরফে চুম্মা বাবুল ও বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান।
এদের মধ্যে জাকির নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। চুম্মা বাবুল নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর দেলোয়া প্রধান জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল মার্কা) প্রার্থী হিসেবে ভোটে জয় লাভ করেছিলেন।
উল্লেখ্য, এই তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে হক ২৩ ফেব্রুয়ারী স্মারকলিপি দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। এরপর জেলা প্রশাসক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ২৮ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি পাঠান। সেই চিঠির আলোকে এদের শোকজ করা হয়েছে।
এরআগে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারী এক অনুষ্ঠানে দেলোয়ার হোসেন প্রধানমন্ত্রীকে হেয় করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ উঠে। চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ভোট নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। বলেছিলেন, নৌকা প্রতীকে নির্বাচন না করলে আরো বেশী ব্যবধানে জয় পেতাম। তার এমন মন্তব্যের পর সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। আর ১২ ফেব্রুয়ারী এক ওয়াজ মাহফিলে চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল ওরফে চুম্মা বাবুল নিজেকে বারদীর ম্যাজিষ্ট্রেট দাবী করে তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেন। তিনি বলেছিলেন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নে যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আসেন তাহলেও আমার অনুমতি লাগবে। বিনা ভোটের এই চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমাকে কেউ টাকা দিয়ে কিনতে পারবে না। আমার এলাকাতে আমি ম্যাজিস্ট্রেট। আমি যা বলবো তাই হবে। আমি যদি সুইচ অফ বলি তাহলে সেটাই হবে। প্রশাসন আমার পক্ষে কাজ করবে। কারও ফোনে প্রশাসন আসবে না।
চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল জানান, চিঠি দিয়েছে। আমার দল আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে আগেই। আমিও আমার বক্তব্যের জন্য অনুতপ্ত। দল থেকে ক্ষমা করার যে চিঠি আমাকে দেয়া হয়েছিল, সেটাই আমি স্থানীয় সরকার বিভাগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রেরণ করবো। এটা খুব বড় কোন ইস্যু নয়।