প্রচলিত ঈসালে সওয়াব ও পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কুরআন খতম: একটি প্রামাণ্য বিশ্লেষণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :
প্রত্যেক মানুষকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ তাআলার এ অলঙ্ঘনীয় রীতি কেউই এড়িয়ে যেতে পারবে না। এব্যাপারে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۖ ثُمَّ إِلَيْنَا تُرْجَعُونَ অনুবাদঃ প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরাঃ আল আনকাবুত, আয়াতঃ ৫৭)
মানুষ যেখানে যেভাবেই থাকুক না কেন যথানির্দিষ্ট নির্ধারিত সময়ে মৃত্যু তার কাছে উপস্থিত হবেই। এব্যাপারে আল্লাহ তাআলা একটি অনন্য উপমা পেশ করে বলেন أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ ۗ
অনুবাদঃ তোমরা যেখানেই থাক (এক দিন না এক দিন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, চাই তোমরা সুরক্ষিত কোন দুর্গেই থাক না কেন।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৭৮)
এ দুনিয়াতে যেই এসেছে তাকেই চলে যেতে হয়েছে -হবে! সময় হলেই মৃত্যু চলে আসবে। যেখানে এক সেকেণ্ড আগেও মৃত্যু আসবে না এক মুহূর্ত পরেও না। যথা সময়ে। আল্লাহ তাআলা বলেন وَلِکُلِّ اُمَّۃٍ اَجَلٌ ۚ فَاِذَا جَآءَ اَجَلُہُمۡ لَا یَسۡتَاۡخِرُوۡنَ سَاعَۃً وَّلَا یَسۡتَقۡدِمُوۡنَ
অনুবাদ: প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য এক নির্দিষ্ট সময় আছে। যখন তাদের সেই নির্দিষ্ট সময় এসে পড়ে, তখন তারা এক মুহূর্তও বিলম্ব করতে পারে না এবং ত্বরাও করতে পারে না। ( সুরা আরাফ : আয়াত :৩৪।)
পবিত্র কুরআন হাদিসের এরকম অসংখ্য অগণিত আয়াত এবং হাদিস দ্ব্যর্থহীনভাবে সু-স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে যে যথাসময়েই সবাইকে মৃত্যু বরণ করতে হবে। এবং বিষয়টি আমাদের সবার নিকট দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট।
মৃত্যুর পরে কবরের জগত সবচাইতে লোমহর্ষক এবং ভয়াবহ। পরকালের এ চিরস্থায়ী জিন্দেগীর ভয়াবহতা এতই বেশি যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কবরের আযাবের ব্যাপারে বারবার সতর্ক করেছেন এবং পরকালের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। বুখারি মুসলিমসহ অসংখ্য হাদীসের কিতাবে মৃত্যু পরবর্তী জীবনের ভয়াবহতা নিয়ে সুদীর্ঘ বিস্তৃত আলোচনা করা হয়েছে। যেমন হাদীসে এসেছে :
عَنْ عُثْمَانَ اَنَّهُ كَانَ اِذَا وَقَفَ عَلي قَبْرٍبَكي حَتّي يَبُلَّ لِحْيَتَهُ فَقِيْلَ لَهُ تَذْكُرُ الْجَنّةَ وَالنَّارَ فَلَاتَبْكِيْ وَتَبْكِىْ مِنْ هذا فَقَالَ اِنّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال اِنّ الْقَبْرَ اَوَّلُ مَنْزِلٍ مِنَ مَنَازِلِ الْاَخِرَةِ فَاِنْ نَجَي مِنْهُ فَمَا بَعْدَهُ اَيْسَرَمِنْهُ وَاِنْ لَمْ يَنْجُ مِنْهُ فَمَا بَعْدَهُ اشَدُّمِنْهُ قَالَ وَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلّى اللهِ عَلَيْهِ وَسَلّمَ مَا رَاَيْتُ مَنْظَرًا قَطُّ اِلَّا وَالْقَبرَ اَفْظَعُ مَنْهُ.
(سنن الترمذي: رقم الحديث: ٢٣٠٨، ابن ماجة: رقم الحديث: ٤٢٦٧)
হযরত ওসমান (রাযিঃ) হতে বর্ণিত তিনি যখন কোন কবরের পাশে দাঁড়াতেন, তখন এমন কাঁদতেন যে, তার দাড়ি ভিজে যেত। একদিন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি এবং জান্নাতের কথা স্বরণ করেন, অথচ কাঁদেন না, আর কবর দেখলেই কাঁদেন, ব্যাপার কি? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: পরকালের বিপদজনক স্থান সমূহের মধ্যে কবর হচ্ছে প্রথম।
যদি কেউ সেখানে মুক্তি পেয়ে যায়, তা‘হলে তার পরের সব স্থানগুলি সহজ হয়ে যাবে। আর যদি কবরে মুক্তি লাভ করতে না পারে তাহলে পরের সব স্থানগুলি আরও কঠিন ও জটিল হয়ে যাবে। অতঃপর তিনি বললেন, নবী করীম (সা.) এটাও বলেছেন যে, আমি এমন কোন জঘন্য ও ভয়াবহ স্থান দেখিনি যা কবরের চেয়ে জঘন্য ও ভয়াবহ হতে পারে। ( তিরমিযি, হাদিস নং : ২৩০৮, ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৪২৬৭ )
অপর এক হাদীসে এসেছে :
عَنْ عَائِشَةَ قَالتْ اَنَّ يَهُوْدِيَّةً دَخَلَتْ عَلَيْهَا فَذَكَرَتْ عَذَابَ الْقَبْرِ فَقَالَتْ لَهَا اَعَاذَك اللهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ فَسألَتْ عَائشةُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ عَذابِ القبْرِ فَقَالَ نَعَمْ عَذابُ الْقَبْرِ حَقٌّ قَالَتْ عائشةُ فَمَا رَأيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ صَلَّى صَلَاةً اِلَّا تَعَوَّذَ بِاللهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ.
(صحيح البخاري: رقم الحديث: ١٣٧٢)
আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা এক ইহুদী মহিলা তার নিকট আসল এবং কবরের আযাবের কথা উত্থাপন করে বলল, আয়েশা! আল্লাহ আপনাকে কবরের শাস্তি হ’তে রক্ষা করুন। অতঃপর আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে কবরের শাস্তি সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূল(সা.) বললেন, হ্যাঁ, কবরের শাস্তি সত্য। আয়েশা (রাঃ) বলেন, তার পর হ’তে আমি রাসূল(সা.) -কে যখনই নাসাজ আদায় করতে দেখেছি। তখনই তাকে কবরের আযাব হ’তে পরিত্রাণ চাইতে দেখেছি। ( সহিহ বুখারি : হাদিস নং : ১৩৭২ )
মৃত্যু পরবর্তী জীবনে কোন বান্দা নিজের আমল দ্বারা সফল হতে পারবে না। এটি একান্তই আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহের উপর নির্ভরশীল। এজন্য এ স্বল্প সময়ের মহামূল্যবান সময়কে গণিমত মনে করে যথাযথ প্রস্তুতি নেয়াটাই প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ।
এব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন বড়ই চমৎকার বলেছেন
عن إبْنِ عُمَرَ أَنَّهُ قَالَ كُنْتُ مَعَ رَسُوْلِ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَجَاءَهُ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَسَلَّمَ عَلَي النَّبِيِّ ثُمَّ قَالَ يَارَسُوْلَ اللهِ اَيُّ الْمُؤْمِنِيْنَ اَفْضَلُ قَالَ اَحْسَنُهُمْ خُلُقًا قَالَ اَيُّ الْمُؤْمِنِيْنَ اَكْيَسُ قَالَ اَكْثَرُهُمْ لِلْمَوْتِ ذِكْرًا وَاَحْسَنُهُمْ لَمَا بَعْدَهُ اِسْتِعْدَادًا اُولئِكَ الْاَكْيَاسُ.
(ابن ماجة: رقم الحديث: ٤٢٥٩)
হযর ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে ছিলাম। হঠাৎ আনছারদের একজন লোক আসলেন। সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম করলেন, অতঃপর বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! সবচেয়ে উত্তম মমিন কে? নবী করীম(সা.) বললেন, চরিত্রে যে সবচেয়ে ভাল। তারপর লোকটি জিজ্ঞেস করলেন, সবচেয়ে বুদ্ধিমান মুমিন কে? রাসূল(সা.) বললেন যে, সবচেয়ে বেশি মরণকে স্মরণ করতে পারে আর মরণের পরবর্তী জীবনের জন্য সবচেয়ে সুন্দর প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। তারাই সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান । ( সুনানে ইবনে মাজাহ : হাদিস নং : ৪২৫৯)
ক্ষণস্থায়ী এ দুনিয়ার মোহ ছেড়ে পাড়ি দিতে হবে পরকালে। যেখানে সুদীর্ঘ এ যাত্রায় বান্দার সঙ্গে তার আমল ছাড়া কিছুই যাবে না। তার ধন সম্পদ আত্মীয় স্ত্রী পুত্র কেউই যাবে না। যাবে শুধু তার আমল।
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন
عَنْ اَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتْبَعُ الْمَيّتَ ثَلَاثَةُ فَيَرْجِعُ اِثْنَانِ وَيَبْقَى مَعَهُ وَاحِدٌ يَتْبَعُهُ اَهْلُهُ وَمَالُهُ وَعَمَلُهُ فَيَرْجِعُ اَهْلُهُ وَمَالُهُ وَيَبْقى عَمَلُهُ.
( صحيح البخاري: رقم الحديث: ٦٥١٤ ، صحيح مسلم، رقم الحديث: ٢٩٦٠)
আনাস (রা.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন মৃত ব্যক্তি যখন কবর স্থানে যায় তার সাথে তিনটি জিনিস যায়। দু’টি জিনিস ফিরে আসে আর একটি জিনিস তার সাথে থেকে যায়। তার সাথে যায় তার পরিবারের সদস্য, সম্পদ ও তার আমল। তার পরিবারের সদস্য ও তার সম্পদ ফিরে আসে, আর তার আমল তার সাথে থেকে যায়।
( সহিহ বুখারি: হাদিস নং : ৬৫১৪, সহিহ মুসলিম : হাদিস নং : ২৯৬০)
এজন্য মৃত্যু পরবর্তী জীবনে আমার নিজের জন্য আমাকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। যা কিছু সঞ্চয় করার সেসব পাথেয় এখনই গোছাতে হবে। কারণ মৃত্যুর পরে মানুষ থাকে সম্পুর্ণ অসহায়। তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। সমুদ্রে পথহারা নাবিক আর গহীন জঙ্গলে পথহারা পথিকের মত হয়ে যায়।
এব্যাপারে ইমাম বাইহাক্বি রাহিমাহুল্লাহ চমৎকার একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন :
عن عبد الله بن عباس – رضي الله عنهما – قال : قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : ” ما الميت في القبر إلا كالغريق المتغوث ، ينتظر دعوة تلحقه من أب ، أو أم ، أو أخ ، أو صديق ، فإذا لحقته كان أحب إليه من الدنيا وما فيها ، وإن الله تعالى ليدخل على أهل القبور من دعاء أهل الأرض أمثال الجبال ، وإن هدية الأحياء إلى الأموات الاستغفار لهم
( شعب الإيمان ٦/٢٠٣ . دار الكتب العلمية. وكذا في مشكاة المصابيح ومرقاة المفاتيح: باب الإستغفار والتوبة. رقم الحديث : ٢٣٥٥ )
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কবরে সমাহিত মৃত ব্যক্তি সে ব্যক্তির মত, যে সমুদ্রে ডুবন্ত অবস্থায় সাহায্যের জন্য আকুল প্রার্থনা জানায়। বেচারা তখন অপেক্ষায় থাকে যে, তার পিতা-মাতা, ভাই-বোন, স্ত্রী- সন্তান অথবা বন্ধু-বান্ধব থেকে রহমত ও মাগফেরাতের দুআ লাভ করবে।
কারও পক্ষ থেকে দুআর উপহার পেলে তা তার নিকট সমস্ত দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তদপেক্ষা অধিক প্রিয় মনে হয়। দুনিয়াতে বসবাসকারীদের দুআর কারণে মৃত ব্যক্তিরা আল্লাহ তা’আলার নিকট থেকে যে বিরাট সওয়াব পায়, তা একমাত্র পাহাড়ের সাথেই তুলনা হতে পারে। মৃতদের জন্য জীবিতদের বিশেষ উপঢৌকন হচ্ছে তাদের জন্য মাগফিরাতের দুআ।
( বাইহাক্বি, শুআবুল ঈমান : ৬/২০৩, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ প্রকাশনী, মিশকাতুল মাসাবিহ, মিরকাতুল মাফাতিহ : হাদিস নং : ২৩৫৫ )
মৃত্যুর পরে বান্দার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। দুনিয়া থেকে উপকৃত হওয়ার কোন পন্থা অবশিষ্ঠ থাকে না। তবে তিনটি কাজ এমন আছে যার দ্বারা বান্দা মৃত্যুর পরেও কবরে থেকে সওয়াব পেতে থাকে। হাদিস শরীফে এসেছে :
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثَةٍ: إِلَّا مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ
( صحيح مسلم، كتاب الوصية، رقم الحديث ١٦٣١ ،
سسن أبي داود، كتاب الوصايا. رقم الحديث ٢٨٨٠ ، مسند أحمد، رقم الحديث ٨٨٤٤ )
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন ব্যক্তি মারা যায়, তখন তার আমলের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি আমল বন্ধ হয় না। এক হল, সদকায়ে জারিয়া, দুই হল, ঐ ইলম যা দ্বারা অন্যরা উপকৃত হয়, তৃতীয় হল, নেক সন্তান যে, তার জন্য দুআ করে।
( সহীহ মুসলিম, ওসিয়্যত অধ্যায় : হাদীস নং-১৬৩১, সুনানে আবু দাউদ, ওসিয়্যত অধ্যায়, হাদীস নং-২৮৮০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং : ৮৮৪৪ )
সুতরাং দুনিয়াতে এমন কিছু করে যেতে হবে যার দ্বারা কিয়ামত পর্যন্ত বান্দার সওয়াব অব্যহত থাকে। যেমন জনকল্যাণমুখী কোন কাজ করা, মসজিদ নির্মাণ করে দেয়া, সন্তানকে আলেম হিসেবে গড়ে তোলা ইত্যাদী। মৃত ব্যক্তির রুহের মাগফিরাত কামনায় তার জন্য দোআ করা, তার নামে সদক্বাহ করা, সঠিক পন্থায় ঈসালে সওয়াব করা ইত্যাদি কাজগুলো করলে মৃত ব্যক্তি সওয়াব পাবে ইনশাআল্লাহ।
কিন্তু এসবের কোন কিছুই না করে আমরা সমাজে এমন কিছু রীতিনীতি উদ্ভাবন করেছি, এমন কিছু প্রথা চালু করেছি যার প্রামাণিকতা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লামের যামানায় ছিলো না। মৃত ব্যক্তির রুহের মাগফিরাত কামনায় এবং তাকে সাওয়াব পৌছানোর উদ্দেশ্যে নিজেদের ইচ্ছামত মনগড়া কিছু প্রথা সমাজে এখন প্রচলিত হয়েছে। কুরআন হাদীসে বর্ণিত ঈসালে সওয়াবের পদ্ধতিকে বস্তাবন্দী করে মনগড়া পদ্ধতিতে চলছে ঈসালে সওয়াব।
বিশেষভাবে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে খানা-পিনা করা, কোরআন খতম করে বিনিময় নেয়া, দোআ করে পারিশ্রমিক আদান-প্রদান করা, ঈসালে সওয়াবের জন্য কোন দিনকে নির্ধারিত করা এবং মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে ডেকে কুরআন খতম করিয়ে তাদেরকে দাওয়াত খাওয়ানো এবং বিনিময় প্রদান ইত্যাদি আরো এধরণের বেশকিছু মনগড়া প্রথা চালু হয়েছে। ইনশাআল্লাহ উক্ত বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা করার চেষ্টা করব বিআউনিল্লাহি তাআলা! আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে উক্ত বিষয়গুলি যথাযথ অনুধাবন করে চিন্তা-ফিকির করা এবং আমল করার পূর্ণ তৌফিক দান করুন। আমিন।