নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনকে তার স্ত্রীর করা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত।
নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় বৃহস্পতিবার (২০ জুন) নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়দা জজ (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২) আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা এ আদেশ দেন।
এর আগে উক্ত মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের জামিন শেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন জামিনের আবেদন করেন তিনি। গত ১৯ জুন আদালতে আত্মসমর্পনের শেষ দিন ছিলো। তবে এ দিন একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর মৃত্যুতে নারায়ণগঞ্জ আদালতের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় নির্ধারিত তারিখে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি।
মাকসুদ হোসেনকে কারাগারে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশিদ।
জানা যায়, মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে মাকসুদ হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী সুলতানা বেগম ২৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনাল আদালতে তাকে আসামি করে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে ২৪ এপ্রিল বন্দর থানায় যৌতুকের জন্য মারধরের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী সুলতানা বেগম।
২৫ এপ্রিল বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এবং বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত একটি ডিভিশন বেঞ্চ মাকসুদের আট সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার আবেদনে সুলতানা বেগম উল্লেখ করেন, গত রবিবার (২১ এপ্রিল) মাকসুদ চেয়ারম্যান কয়েকজন বন্ধুদের সাথে নিয়ে রাত ১১ টায় এই মামলার বাদীনি ও তার স্ত্রী সুলতানা বেগমের পিত্রালয়ে আসে এবং ২০২২ সালের করা একটি যৌতুক মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এসময় স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। চেয়ারম্যান মাকসুদ তার স্ত্রীকে বলেন, ওয়ারিসি সম্পত্তি এখন বিক্রয় না করিলে পরে আর ওয়ারিস নেওয়া যাইবে না, তাই সম্পত্তি বিক্রয় করে মাকসুদ চেয়ারম্যানের হাতে দিলে তা ভাল ব্যবসায় কাজে লাগাবো এবং তাকে (এই মামলার বাদীনিকে) তুলে নিয়ে পূর্ণ স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে রাখিবেন ইত্যাদি বলে ফুসলাতে থাকে। এর সাথে পূর্বের যৌতুকের মামলাটি তুলে ফেললেই সুলতানা বেগম ও তাদের কন্যাকে নিয়ে সংসার করবেন বলে আশ্বাস দেন। এসময় মামলা তুলে নেয়ার জন্য বুঝিয়ে ব্যর্থ হয়ে উত্তেজিত হয়ে উঠেন মাকসুদ চেয়ারম্যান। যৌতুক মামলা তুলে না নিলে খুন করে ফেলবেন বলে স্ত্রীর দিকে তেড়ে আসেন তিনি। এঘটনায় তাদের মেয়ে শ্রাবন্তী বাধা দিলে লাথি দিয়ে সড়িয়ে দেন এবং স্ত্রীকে মারপিট শুরু করেন। মাকসুদ চেয়ারম্যান তার স্ত্রীকে হত্যার উদ্দ্যেশে গলায় পাড়া দিয়ে ধরলে আবারও মাকে বাচাতে আসেন তাদের মেয়ে শ্রাবন্তী। পরবর্তীতে ২ জনকেই প্রহার করে এবং যৌতুক দিবি না আবার মামলা করবি? মেরে মাটিতে পুতে ফেলবো, বলে হুমকি প্রদান করেন মাকসুদ চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় মাকসুদ চেয়ারম্যান তার স্ত্রী ও ৪ কন্যা সন্তানকে নির্যাতন করেন বলে উল্লেখ করা হয়।