রাস্তায় রেখে যাওয়া একদিনের নবজাতকের মৃত্যু, মা গ্রেফতার
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এক নবজাতককে রাস্তা থেকে উদ্ধারের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নবজাতকের মা রিক্তা বেগমকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২১ নভেস্বর) নবজাতকের বাবা লাল মিয়া বাদী হয়ে স্ত্রী রিক্তাকে আসামি করে বন্দর থানায় মামলাটি করেন।
গ্রেফতার নবজাতকের মা রিক্তা বেগম জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানার কুলকান্দি মধ্যপাড়া এলাকার মৃত রফিকুল ইসলাম মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১২ বছর আগে জামালপুরের ইসলামপুর থানার কুলকান্দি আকন্দপাড়া এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিক মিয়ার ছেলে লাল মিয়ার সঙ্গে একই থানার একই এলাকার মৃত রফিকুল ইসলাম মিয়ার মেয়ে রিক্তা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে রিহাত নামের আট বছরের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। শুক্রবার (২০ নভেম্বর) দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন রিক্তা। জন্মের পর তিনি নবজাতককে বাড়ির পাশে খালের পাড়ে রেখে যান। হাসপাতালে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়।
নবজাতকের বাবা লাল মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রী রিক্তা বেগম বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা বড় জামে মসজিদ সংলগ্ন আহসান উল্ল্যাহ মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছি। এ সুবাদে সংসার চালানোর জন্য আমি শহরের একটি ময়দার মিলে শ্রমিকের কাজ করি। ১০ মাস আগে আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়। ১৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় আমি আমার কর্মস্থলে যাই। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় আমি বাড়িতে এসে দেখি আমার স্ত্রী বিছানায় কাঁথা গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে। বাড়িওয়ালার ছেলে চিৎকার করে বলছিলেন, ভাড়াটিয়ার ঘরের পেছনে একটি বাচ্চা পাওয়া গেছে। ওই বাচ্চাটি তাৎক্ষণিক বাড়িওয়ালার ছেলে সজীব উদ্ধার করে বন্দর থানায় নিয়ে যান।
পরে থানা পুলিশ উদ্ধার নবজাতককে বন্দর ছাঁয়ানূর হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে নবজাতককে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে মাতুয়াইল শিশু ও মা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) ফখরুদ্দীন ভূঁইয়া জানান, মায়ের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় নবজাতকের বাবা বাদী মামলা করেন। এ মামলায় নবজাতকের মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মা নবজাতককে রাস্তায় রেখে যান-বিষয়টি নিশ্চিত হলেও এখনো ফেলে যাওয়ার কারণ জানতে পারেনি পুলিশ। অন্যদিকে শিশুটিকে রাস্তায় ফেলে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন মা।