করোনাভাইরাসের আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খাবারের রুচি আগের মতো আছে বলে জানিয়েছেন তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, অন্য দিনের চেয়ে আজ অনেকটা ভালো বোধ করছেন বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন। এই অবস্থায় তার যে চিকিৎসাটা চলছে, সেটাই চলবে। ১৪তম দিন পার হলে মেডিকেল বোর্ডের আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে, সেগুলো করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাতে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়াকে দেখে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, আগামীকাল (বুধবার) দুপুর পর্যন্ত ম্যাডামের জন্য একটা ক্রুশিয়াল টাইম। কারণ কাল তার করোনা আক্রান্তের ১৪তম দিন শুরু হবে।
খালেদা জিয়ার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেটা স্বাভাবিক মানুষের থাকা উচিত, সেটাই আছে। তার শ্বাস-প্রশ্বাস, অক্সিজেন সেচুরেশন খুব ভালো আছে। তার কখনও গলা ব্যথা, কাশি এসব উপসর্গ ছিল না। এখনও নেই।
ছেলে তারেক রহমান সার্বক্ষণিক মা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার খোঁজ-খবর রাখছেন জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন ডা. জোবাইদা রহমান।
তিনি জানান, খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন এবং সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছেন। আগামী রোববার-সোমবারের মধ্যে খালেদা জিয়ার বাকি পরীক্ষাগুলো করানো হতে পারে বলেও জানান ডা. জাহিদ।
খালেদা জিয়া করোনার টিকা নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা নেগেটিভ আসার পর চার সপ্তাহ হওয়ার আগ পর্যন্ত টিকা নেওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ। তার আরও কিছু রোগ আছে। সে বিষয় মাথায় রেখে এখন আমরা যে ক্লোজ অবজারভেশন করছি, সেটা অব্যাহত রাখতে হবে। এই পুরো মাসটা তার স্বাস্থ্যের দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। কারণ আপনারা জানেন অনেক রোগীর দুই-তিন সপ্তাহেও নেগেটিভ রিপোর্ট আসে না। অনেক ক্ষেত্রে করোনা নেগেটিভ হতে চার সপ্তাহও লাগে। কাজেই করোনার গতি প্রকৃতি কোন দিকে যায়, প্রত্যেকটা জিনিস আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। কখনও আমাদের ঢিলেমি করলে চলবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডা. আল মামুন এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া ইউংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনি ছাড়াও তার বাসভবন ফিরোজার আরও ৮ জন ব্যক্তিগত স্টাফ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হন। তাদের চিকিৎসাও এখানে চলছে। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের নির্দেশনায় চিকিৎসা চলছে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর। গত ১৫ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান করা হয়। সেটির ফলাফলও ভালো এসেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। প্রায় আড়াই বছরের মতো কারাগারে ছিলেন তিনি। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয়। দুই দফায় এ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। সূত্র- ঢাকা পোষ্ট