ধর্ম

যিল হজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের গুরুত্ব ও করনীয় আমল

শেখ সোহেল, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :

যিল হজ্জ তথা কুরবানীর মাসের প্রথম দশকের বিভিন্ন ফযীলত উপেক্ষা করে শুধু কুরবানী করতে আগ্রহী হওয়া উচিত না বরং যিল হজ্জ মাসের ১ম দশক খুবই ফযীলতপূর্ণ দশক।

অনেক উলামায়ে কেরামের মতে, আল্লাহর নিকট যিল হজ্জ মাসের প্রথম দশকের দিনের সৎ আমল সমূহ রামাযানের শেষ দশকের দিনের ইবাদতের থেকেও উত্তম। [শারহুল্ মুমতি, ইবনু উছায়মীন,৬/৪৭০]

নবী (সাঃ) বলেনঃ “কোনো এমন দিন নেই, যাতে এই দশকের তুলনায় সৎ আমল আল্লাহর নিকট বেশী পছন্দনীয়।

সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও কি বেশী পছন্দনীয় নয়? নবী (সাঃ) বললেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও বেশী পছন্দনীয় নয় কিন্তু সেই ব্যক্তি যে তার জান ও মাল নিয়ে বের হয় এবং তা নিয়ে আর পুনরায় ফেরত আসে না”।
[বুখারী, দুই ঈদ অধ্যায়, নং (৯৬৯)/আবু দাঊদ নং (২৪৩৮)]

উপরোক্ত হাদীসের মর্মার্থ ব্যাপক, তাই সকল সৎ আমল এই দশকে বেশী বেশী করণীয়, তন্মধ্যে যেমনঃ হজ্জ ও উমরাহ। কারণ এটি হজ্জের মাস এবং উক্ত আমল দুটির ফযীলতও অপরিসীম।

নবী (সাঃ) বলেনঃ “এক উমরা আর এক উমরার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফ্ফারা স্বরূপ। আর (মাবরূর) গৃহীত হজ্জের বদলা জান্নাত ছাড়া কিছু নয়”।
[বুখারী, নং ১৭৭৩ মুসলিম নং ১৩৪৯]

সালাত আদায় করা : (ফরজ সালাতগুলি জামাতে এবং বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করা)

সিয়াম পালন: যেহেতু হাদীসে সৎ আমল কথাটি ব্যাপক আর রোযা হচ্ছে সৎ আমল, তাই অনেকে এই দশকের ১ম থেকে নবম দিন পর্যন্ত রোযা পালন উত্তম মনে করেছেন। [শারহু মুসলিম, নবভী, ৮/৭৫]

বিশেষ করে আরাফার দিনে। কারণ আরাফার দিনের রোযা বিগত ও আগত এক বছরের গুনাহের কাফ্ফারা স্বরূপ। [মুসলিম, নং ১১৬২]

এই দশকে তাকবীর পাঠ করা।
আরাফার দিনের ফজর থেকে শুরু করে তাশরীকের দিনের শেষ পর্যন্ত, তথা যিলহজ্জ মাসের তেরো তারিখের আসর পর্যন্ত তাকবীর বলা। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِي أَيَّامٍ مَعْدُودَاتٍ
“আর তোমরা আল্লাহকে স্মরণ কর নির্দিষ্ট দিন সমূহে।” (সূরা বাকারা: ২০৩)

তাকবীর বলার পদ্ধতি:
الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله والله أكبر، الله أكبر ولله الحمد-
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।

আল্লাহর মহত্মের ঘোষণা এবং তাঁর ইবাদত ও কৃতজ্ঞতার বর্হি:প্রকাশের উদ্দেশ্যে পুরুষদের জন্য মসজিদে, বাজারে, বাড়িতে ও পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরে উচ্চ স্বরে তাকবীর পাঠ করা সুন্নত।

একটি হাদীসে তিনি বলেন:“যুলহাজ্জ মাসের প্রথম দশদিনের চেয়ে আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাময় কোনদিন নেই এবং নেক আমল করার জন্য এগুলির চেযে বেশি প্রিয় দিন আর নেই।

অতএব তোমরা এদিনগুলিতে বেশি বেশি তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাকবীর (আল্লাহু আকবার) আদায় করবে।

অন্য বর্ণনায়: বেশি বেশি তাহলীল, তাকবীর ও আল্লাহর যিকর করবে। (হাদীসটি সহীহ। হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/৩৯)

কুরবানী করা, দুআ, কুরআন তিলাওয়াত, যিকর-আযকার, সাদাকা, আত্মিয়তা বজায় রাখা ইত্যদি।

কিন্তু আমরা অনেকে উপরোক্ত আমল সমূহের তেমন গুরুত্ব না দিয়ে কেবল কুরবানী করার জন্য, পশু ক্রয় করা ও তা কুরবানী দেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকি।

Related Articles

Back to top button