ধর্ম

মাহে রমজানের প্রস্তুতি

নিউজ ডেস্ক, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :

আর কয়েক দিন পরেই বাঁকা চাঁদ পশ্চিমাকাশে উদিত হবে; রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের সওগাত নিয়ে পবিত্র মাহে রমজানুল মোবারক। রমজান মাসের আমল ও ইবাদতের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই একজন মুমিনের জন্য রমজান মাসের প্রস্তুতি অতিব গুরুত্বপূর্ণ।

তবে যে মাসের সমাপ্তিতে এই মহিমান্বিত মাসের আগমন সেই শাবান মাসের ও রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত। শাবান মাসকে রমজান মাসের প্রস্তুতির মাস হিসেবে গ্রহণ করে রাসূল সা: বিশেষ দোয়া করতেন এবং সাহাবিদেরও শিক্ষা দিতেন। রাসূল সা: এই বলে দোয়া করতেন যে, ‘হে আল্লাহ রজব ও শাবান মাসে আমাদের বিশেষ বরকত দান করো এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের পৌঁছে দাও।

রমজান মাসের প্রস্তুতির লক্ষ্যে শাবান মাসকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। হজরত আয়েশা রা: বর্ণনা করেন- রাসূল সা: শাবান মাসের চাঁদের কথা এত গুরুত্বের সাথে স্মরণ করতেন যা অন্য মাসের বেলায় হতো না। মাহে রমজানের মর্যাদা রক্ষায় এবং এর হক আদায়ের অনুশীলনের জন্য রাসূল সা: শাবান মাসে অধিক হারে রোজা রাখতেন।
শাবান মাসের বৈশিষ্ট্যের অন্যতম হলো- এ মাসের পঞ্চদশতম রাত যা শবেবরাত হিসেবে পরিচিত। এ রাতেরও রয়েছে বিশেষ তাৎপর্য। শাবান মাস হলো মাহে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করার মাস। তাই রমজান মাসের প্রস্তুতি গ্রহণে শাবান মাসের ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম।

শাবান মাসের পরিচিতি : ইসলামী বর্ষপঞ্জিকায় অষ্টম মাস হলো শাবান মাস। যা রজব ও রমজান মাসের মধ্যবর্তী মাস শাবান। এ মাস বড় পুণ্যময় ও ফজিলতময়। রমজানের আগমনী বার্তার মাস। রমজানের পূর্ববর্তী নিকটতম মাস হিসেবে এ মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক।

রাসূল সা: বলেন, ‘রজব মাসে চাষাবাদ করে ইবাদতের বীজ বপন করো। শাবান মাসে তাতে পানি দাও এবং রমজান মাসে এর ফসল আহরণ করো।’

শাবান মাসের নামকরণ : শাবান আরবি শব্দ। যার অর্থ ছড়িয়ে পড়া, বিস্তৃতি লাভ করা। যেহেতু এ মাসে আল্লাহ তায়ালার অপার অনুগ্রহ ও দয়া বিস্তৃতি লাভ করে জগতবাসীর ওপর এবং মুমিনদের প্রতি এ মাসে তার বিশেষ কৃপার দৃষ্টির শাখা-প্রশাখা প্রসারিত হয়, তাই এ মাসকে শাবান নামকরণ করা হয়েছে। এ মাসে যারা রোজা রাখে তাদের জন্য রয়েছে অনেক কল্যাণ ও বরকত।

শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত : প্রিয় নবী মোহাম্মদ সা: বলেন, ‘তোমরা রমজানের উদ্দেশ্যে শাবান মাসের চাঁদের হিসাব রাখবে। কেননা, শাবান মাসের চাঁদের হিসাব নির্ভুল হলে রমজানের চাঁদের বিষয়ে মতভেদ হবে না।’

মুয়াত্বা এ ইমাম মালিকে বর্ণিত আছে, হজরত আয়েশা রা: বলেন, রাসূল সা: অন্যান্য মাসের তুলনায় শাবান মাসে অধিক রোজা রাখতেন। শাবান মাস এলে রাসূল সা: স্বীয় আমলের পরিমাণ স্বাভাবিক অবস্থা থেকে ব্যাপকহারে বাড়িয়ে দিতেন এবং সবাইকে অধিক নেক আমলের প্রতি উৎসাহ দিতেন।’

হজরত আয়েশা রা: বলেন, রাসূল সা: বলেছেন- ‘রমজান হলো আল্লাহর মাস। কেননা, রমজান মাসের রোজা রাখাকে তিনি ফরজ করেছেন। আর শাবান মাস হলো আমার মাস, অর্থাৎ এ মাসে রোজা ইত্যাদি নফল কাজ আমি সুন্নত করেছি। তাই শাবান মাস হলো পরিত্রাণকারী আর রমজান মাস হলো মোচনকারী।’

পুরো শাবান মাসজুড়ে আল্লাহর বান্দাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুণ্য ও সওয়াব অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ। আল্লাহর সন্তুষ্টিকামী মুমিনদের জন্য আবশ্যক হলো সমগ্র মাসকে তারই ইবাদতে মনোনিবেশ করা।

Related Articles

Back to top button