রাজনীতি

নাসিক নির্বাচনের পর রাহুমুক্ত হচ্ছে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :

সামনে এগিয়ে যাওয়ার নামই রাজনীতি হলেও দীর্ঘদিন রাজনীতিতে দূর্দিন পার করেছেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতিবিদরা।

গত এক যুগেরও বেশী আওয়ামীলীগের সরকার ক্ষমতায় থাকলেও অনেকটা কোনঠাসা ছিলেন রাজনৈতিক এলাকা হিসেবে খ্যাত সোনারগাঁ উপজেলার তৃণমুল আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা।

নারায়ণগঞ্জের এক প্রভাবশালী এমপি ও নব্য আওয়ামীলীগারদের কারণে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাজানো বাগান ভেঙ্গে লন্ড-ভন্ড হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই তারপরও হাল ছাড়েননি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত।

পালা বদলের এ রাজনীতি থেকে কেউ মুক্ত হতে পারেন না। সুদিন দূর্দিন সবারই থাকে। রাজনীতিতে শেষ বলে কোন কথা নেই। ক্ষমতা আসবে ক্ষমতা যাবে এ নিয়েই রাজনৈতিক জীবন শেষ করেন রাজনীতিবিদরা।

সকল ষড়যন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে অবশেষে নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী পূনরায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর মনে করা হচ্ছে রাহুমুক্ত হচ্ছে সোনারগাঁ আওয়ামীলীগ।

ভেঙ্গে যাওয়া লণ্ডভণ্ড সেই বাগানকে আবার ঢেলে সাজানোর স্বপ্ন দেখছেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের কাণ্ডারি যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমসহ মাহফুজুর রহমান কালামরা।

ঐতিহ্যবাহী আওয়ামীলীগ পরিবারগুলো তাদের পুরোনো স্বপ্নকে নতুন করে নতুন আঙ্গিকে চাঙ্গা করছেন। মুক্তি পাচ্ছেন ব্যক্তি কেন্দ্রিক ভাই খ্যাত লীগ থেকে।

জানাগেছে , গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে তৎকালীন এমপি কায়সার হাসনাতকে বাদ দিয়ে সোনারগাঁ থেকে মনোনয়ন পান জাতীয়পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। তারপর ২০১৯ সালের নির্বাচনেও ফের মনোনয়ন পেয়ে এমপি মনোনীত হোন লিয়াকত হোসেন খোকা। যদিও সেই নির্বাচনে সাবেক এমপি কায়সার দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অবশেষে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর ক্ষমতার হ্রাস পেতে থাকে ঐতিহ্যবাহী হাসনাত পরিবার তথা সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক দাপট।

এরপর নারায়ণগঞ্জের এক প্রভাবশালীর এমপির রাজত্ব চলতে থাকে সোনারগাঁয়ে। সেই রাজত্বের কারণে আওয়ামীলীগের নেতারা ক্ষমতার সাম্রাজ্য হারাতে থাকেন। নব্য আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির ক্ষমতার কাছে ক্ষমতা হারাতে হয় তাদের সর্বক্ষেত্রে। যার প্রতিফলন ঘটে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির মাধ্যমে। ব্যক্তি কেন্দ্রিক ভাই খ্যাত লীগের কারণে পদ-পদবী হারা হোন সাবেক এমপি কায়সার ও কালামসহ অসংখ্য ত্যাগী নেতারা। ক্ষমতা চলে যায় নব্য আওয়ামীলীগ ও চাটুকারদের হাতে। তারপরও হতাশ হননি কায়সার কালাম বলয়। তারা নব্য আওয়ামীলীগ ও আহবায়ক কমিটিকে জায়গায় জায়গায় বাঁধার সৃষ্টি করেন। তাদের বাঁধার কারণে সোজা হয়ে দাড়াতে পারেনি জাতীয়পার্টি ও আহবায়ক কমিটি।

যদিও ২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে হাসনাত পরিবার থেকে মোশারফ হোসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। কিন্তু তিনি বয়সের বাড়ে রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারেননি ।

নাসিক নির্বাচনে কায়সার কালাম, ইঞ্জিনিয়ার মাসুম, নান্নুসহ সকল নেতারা উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নৌকা প্রতিককে নির্বাচিত করতে প্রতিদিন মাঠ চষে বেড়িয়েছেন তারা। সাথে যোগ দিয়ে ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারাও।

নাসিক নির্বাচনে অনেকটা দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে নিশ্চুপ ছিলেন সেই প্রভাবশালী এমপি যিনি সোনারগাঁয়ের রাজনৈতিক গুরু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। সাথে নিশ্চুপ ছিলেন ভাইখ্যাত আওয়ামীলীগ নেতারাও। সেই এমপির নিরবতার কারণে কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে ঈঙ্গিত করে আগামীতে মনোনয়ন না দেয়ারও অঙ্গিকার করেন।

এছাড়াও জানাযায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর, জেলা ও জেলার সবকটি ইউনিটের শামীম ওসমানের অনুসারী ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমীকলীগের সব কমিটি বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়। যে কমিটিগুলী শামীম ওসমানপন্থি বলে পরিচিত।

Related Articles

Back to top button