বন্দর

যুবলীগ নেতা হাতেমকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত

বন্দর প্রতিনিধি, সোনারগাঁ টাইমস২৪ ডটকম :

জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হাতেম হোসেন পলাতক। হাতেম খন্দকার সহ ৩ জনকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার চেক প্রতারণা মামলায় গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক রায়ে এই নির্দেশ দেয়।

খন্দকার হাতেম হোসেন বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নের মৃত আঃ মজিদ খন্দকারের ছেলে। তিনি দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় যাবত বন্দর থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

অপর দুইজন হলেন ১০৬/২০২১ মামলার ১ নং আসামি মোঃ শরিফুল ইসলাম (৩৮) পিতা মৃত মোঃ লুৎফর রহমান এবং ২ং আসামি মোঃ ফেরদৌস ইসলাম (৪৭) পিতা মোঃ নুরুল ইসলাম৷

স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা যায়, যুবলীগের নাম পদবী ব্যবহার করে দীর্ঘ দিন যাবত এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে বিভিন্নভাবে প্রতারণা ও মানুষের জমিজমা অবৈধভাবে দখল করে অঢেল টাকার মালিক হয়েছেন তারা।

এর আগেও জেলা পরিষদের উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি এক মহিলা ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়।
মামলার বাদী বন্দর উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম পলাশ মদনপুর ইউনিয়ন এর বাসিন্দা এবং পেশায় একজন ব্যবসায়ী।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট খোকন সাহা জানান, বাদীর সঙ্গে আসামি খন্দকার হাতেম হোসেন এর বন্ধুত্বপূর্ন এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বাদীর প্রতিষ্ঠানে (মেসার্স আল্লাহরদার ব্রিকস এন্ড ম্যানুফ্যাকচারার) খন্দকার হাতেম এর যাতায়াত ছিল। এর মধ্যে খন্দকার হাতেম গং রা কৌশলে বাদীর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে বাদীর ব্যাংক একাউন্ট (প্রিমিয়ার ব্যাংক) এর কিছু চেক চুরি করে নিয়ে যায়৷ তার কিছুদিন পর ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা লিখে হয়রানি ও আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে একটি চেক আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংকে ইস্যু করেন ১ং আসামি শরিফুল ইসলাম। কিন্তু পূর্বেই বাদী সাইফুল ইসলাম পলাশ চুরি হয়ে যাওয়া চেক গুলো সম্পর্কে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। যার ফলে ব্যাংক থেকে সেই চেক ফিরিয়ে দেন৷ এবং পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালীশের মাধ্যে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা লিখিত একটি চেক ১ং আসামি শরিফুল ইসলাম ও ৩ং আসামি খন্দকার হাতেমের কাছে থেকে উদ্ধার করে দেন৷
এর কিছুদিন পর মামলার ২ং আসামি মোঃ ফেরদৌস ইসলাম ১ কোটি ২০ লাখ টাকা লিখিত আরেকটি চেক আইএফআইসি ব্যাংকে ইস্যু করেন৷ সেই চেকটিও ব্যাংক থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে বাদী সাইফুল ইসলাম পলাশ নারায়ণগঞ্জ জেলা মাজিস্ট্রেট আদালতে উক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন৷ আদালত সেই মামলা আমলে নিয়ে পিবিআই কে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন৷ পিবিআই এর তদন্তে উক্ত মামলার সত্যতা প্রমাণিত হলে পিবিআই আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন৷

পরবর্তীতে আদালত উক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।

এই খবর জানাজানি হলে বুধবার বিকেল থেকেই আত্মগোপনে চলে যান প্রতারক খন্দকার হাতেম হোসেন। তার বিরুদ্ধে এই প্রতারণা ছাড়াও বিভিন্ন অপকর্ম রয়েছে বলেও জানান এলাকাবাসী।

Related Articles

Back to top button